ঈদযাত্রায় বাসে চাপ নেই শেষ বেলায়ও। গতকাল রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, বাসে তেমন ভিড় নেই এই শেষ মুহূর্তে এসেও। যাত্রীর অভাবে একটি বাসের আসন পূর্ণ হতে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। টার্মিনালগুলোর এমন দৃশ্য দেশের স্বাভাবিক সময়ের ঈদ যাত্রার একেবারেই বিপরীত। আগের ঈদগুলোতে অগ্রিম কেনা টিকিট হাতে নিয়ে যাত্রীরা টার্মিনালে অপেক্ষা করত বাসের জন্য। এখন যাত্রীদের জন্য অপেক্ষায় থাকছে বাস। মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা পরিবহনের কাউন্টারের সামনে টিকিটের জন্য যাত্রীরা লাইন ধরে দাঁড়িয়েছে। তবে অন্যান্য ঈদের আগে যেমন দীর্ঘ লম্বা লাইন দেখা যায় কাউন্টারের সামনে, তেমন নয়। যাত্রীদের বেশির ভাগই ছিল পুরুষ। নারী ও শিশু একেবারেই কম।
পরিবার ঢাকায় রেখে একা বাড়ি যাচ্ছি, বাড়িতে অবস্থান করা ভাইদের সঙ্গে প্রতিবছর ভাগে কোরবানি করি, সে জন্য যাচ্ছি, কোরবানি করে মাংশ নিয়ে ঢাকায় চলে আসব।’ গাবতলী টার্মিনালে দেখা যায় ফরিদপুরগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী তোলা হচ্ছে। দুই আসনে একজন করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
গত বছর ঈদুল আজহায় ঈদের আগের শেষ পাঁচ দিনে প্রতিদিন ঢাকা থেকে ছেড়ে গেছে ১০ হাজার বাস। গড়ে প্রতিটি বাসে ৪০ জন করে চার লাখ লোক ঢাকা ছেড়েছে প্রতিদিন। সেই হিসাবে শেষ পাঁচ দিনে শুধু বাসেই ঢাকা ছেড়েছে ৪০ লাখ মানুষ। মালিক সমিতির নেতাদের মতে, এবার ঈদে সর্বোচ্চ ছয় হাজার বাস যাত্রী পরিবহন করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি বাসে গড়ে ২০ জন করে যাত্রী বহন করছে (প্রতি দুই আসনে একজন)। গত কোরবানির ঈদে যাত্রীর চাপ ছিল পাঁচ দিন আগে থেকে। এবার সেই চাপ কিছুটা দেখা যাচ্ছে ঈদের তিন দিন আগে (গতকাল বুধবার) থেকে। এবারের ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন ঢাকা ছাড়ছে এক লাখ ২০ হাজার যাত্রী। সেই হিসাবে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ঈদের আগের তিন দিনে ঢাকা ছাড়বে সর্বোচ্চ তিন লাখ ৬০ হাজার যাত্রী।
এখন যে সংখ্যক যাত্রী হচ্ছে তাকে ঈদ যাত্রা বলা যায় না, করোনার আগে স্বাভাবিক সময়েও এর চেয়ে বেশি মানুষ প্রতিদিন ঢাকা ছাড়ে।’ তিনি বলেন, ‘বাস মালিকরা সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী বহন করছেন।’ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাচ্চু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী বহন করা হচ্ছে। তবে এবারের ঈদে যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। করোনা, বন্যাসহ অর্থনৈতিক সংকটে মানুষ ঈদ উপভোগ করতে পারছে না, সে কারণে যাত্রীও কম।’ ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী এইচওয়াই পরিবহনের মালিক ইউনুস আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদের সময়ে ঢাকা শহরে হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে, যে লোকদের ঢাকায় খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা নেই, ঈদে সেই ধরনের বেশির ভাগ লোকই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছে।