রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে মারা যান তারা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগের দিন ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই হাসপাতালে।
শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে আট জন ও উপসর্গে নয় জন মারা গেছেন। এছাড়া করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ এবং চার জন নারী।
এদের মধ্যে আট জনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিন জন ও ৪১ থেকে ৫০ বছরের দুইজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে নয় জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া নওগাঁর তিন জন, নাটোরের দুই জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই জন এবং পাবনা ও কুষ্টিয়ার একজন করে রয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগীদের ভর্তি ও সংক্রমণের বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৮ জন। রামেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২২১ এবং উপসর্গ নিয়ে ২০২ জন ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে রামেক হাসপাতালে ৪৫৪টি করোনা ডেডিকেটেড শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ৪৮৫ জন।
করোনা শনাক্তের বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের পিসিআর মেশিনে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২৮ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর মেশিনে ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১৩ জনের করোনা পজিটিভ আসে।
দুই ল্যাবের টেস্টে মোট ৫৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৪১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। পরীক্ষা বিবেচনায় রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উঠেছে।
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে রাজশাহীতে গত ১১ জুন থেকে বিশেষ ‘লকডাউন’ চলমান আছে। রামেক হাসপাতালে এই সাতদিনে মোট ১৩৮ জনের মৃত্যু হলো।
এছাড়া গত জুনে ৪০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগী ছিলেন ১৮৯ জন। অন্যরা করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।