লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: জেলায় দু’জনের করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরও ২৫ জনে। এরমধ্যে একই পরিবারের ৮ জন ও অপর পরিবারের ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
দিন দিন বেড়ে চলছে করোনারোগীর সংখ্যা। এ জেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৪ জন। রোগ শনাক্ত হওয়ার আগেই মারা গেছেন একজন।
করোনাভাইরাস উপসর্গের তথ্য গোপন ও জনসচেতনতার অভাবে সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ৪ মে রায়পুরের সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া গ্রামের ১৩ বছরের এক শিশুর করোনা শনাক্ত হয়। এরআগে ২ মে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
এরপর তাঁর সংস্পর্শে থাকা স্বজনসহ ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে, তাঁদের মধ্যে আরও ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এরমধ্যে শিশুটির পরিবারের ১২জন করোনা পজিটিভ। যদিও শিশুটি দীর্ঘদিন থেকেই করোনা উপসর্গে ভুগছিল।
এ ঘটনায় রায়পুর শহরের সেবা হাসপাতালসহ ওই পরিবারটি ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি পরিবারকে লকডাউন রাখা হয়।
এ নিয়ে এ উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ জনে। শুক্রবার (১৫ মে) এ তথ্যে নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন।
এরআগে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার এক বাসিন্দা ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গ্রামে ফেরে করোনা উপসর্গ তথ্য গোপন করেন।
পরে ওই গার্মেন্টস কর্মীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নমুনা সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। নমুনা পজিটিভ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
ওইসময় তার সংস্পর্শে আসা পরিবার স্বজন ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে আরও ১২জন পজিটিভ হয়। এরমধ্যে তার পরিবারেরই ৮জন আক্রান্ত হন।
জেলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আর পরীক্ষা সম্পন্ন হয় ১ হাজার ৫২৭ টি। এতে করোনা শনাক্ত হয় ৮০ জনের।
আক্রান্তদের মধ্যে সদরে ২৫ জন, রামগঞ্জে ১৯ জন, কমলনগর ৮জন, রামগতি ১০ জন ও রায়পুর উপজেলায় ১৮ জন।
এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৪ জন। এরমধ্যে কমলনগরে ৪, রামগতি ১, রামগঞ্জ ১০ ও সদরে ৯জন। রামগঞ্জে অপর একজনের রোগ শনাক্ত হওয়ার আগে মারা যান।
এদিকে জেলায় দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চললেও মানুষের মধ্যে বাড়েনি সচেতনতা। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে, পাড়া-মহল্লায় মানুষের ব্যাপক সমাগম লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ী-ক্রেতা অধিকাংশই মানছে না সামাজিক দূরত্ব বা সুরক্ষা নিয়ম।
এতে করে করোনা সংক্রমণের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার বাসিন্দারা।
জেলার সিভিল সার্জন মো. আবদুল গফ্ফার বলছেন, করোনা উপসর্গ গোপন ও সচেতনতার অভাবের কারনে সংক্রমণ বাড়ছে । করোনার উপসর্গ, জ্বর সর্দী, কাশি দেখা দিলে অবশ্যই জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। নিজেকে অন্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে।
তথ্যগোপন ও সংস্পর্শে আসার কারনে যেকোন একজন থেকে এ রোগ নিজ পরিবারের সবার ও আশপাশের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।