ড. বিজন কুমার শীল বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত কেউ জানুক আর না জানুক, বাংলাদেশে আগামী শীতের আগেই বেশির ভাগ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি চলে আসবে।
ফলে কমে যাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার। তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের দেশে সেকেন্ড ওয়েব চলছে। নতুন করে ছড়ানোর শঙ্কা কম।
শীতের আগেই করোনা সংক্রমণের হার অনেকাংশে কমে যাবে। আমাদের দেশে লকডাউন তেমন কাজ করেনি। তাই করোনাভাইরাস সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে।
এখন ভাইরাসও দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ কারণে অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ মানুষের শরীরের মধ্যে এন্টিবডি চলে আসবে।
এই অণুজীব বিজ্ঞানী বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
মাস্ক পরতে হবে। বাসায় গিয়ে হাত, মুখ ও নাক ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে গারগলও করতে হবে। তবে বেশি গরম পানিতে নয়, হালকা কুসুম গরম পানিতে গারগল করলে ভালো হয়।
সেখানে একটু চা দিলে আরও ভালো হয়। মুখে যতটুকু সহ্য হবে ততটুকুই গরম হলে ভালো হয়। কারণ, বেশি গরম পানি নাকের স্পর্শকাতর স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্যও বিনষ্ট করতে পারে।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আক্রান্তের যে হার তাতে আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে ৩৫ ভাগ মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ইনফেকশন হওয়া ৫ ভাগ মানুষ তা জানতে পারছে।
বাকিরা জানতেই পারছে না, নিজের মধ্যে কখন এন্টিবডি তৈরি হয়েছেএটা একটা ভালো দিক। নন কভিডরা জানতেই পারছে না, তাদের কখন করোনা হয়ে আবার এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে তারা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। অন্য জটিল কোনো রোগে আক্রান্তদের এটা ছড়ালে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
দুটো দিকই আছে। তাই এ মুহূর্তে সবার বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই। এর দামও কমেছে, সহজলভ্যও। রাস্তাঘাটে এগুলো ফেলা যাবে না। এতে নালায় পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. বিজন বলেন, সেকেন্ড ওয়েব আমাদের দেশে চলছে। সংক্রমণের হার এখন আর বাড়ছে না, তবে অবস্থান করছে।
নতুন করে ছড়ানোর শঙ্কা কম। আশা করা যায়, ইউরোপের মতো ব্যাপকহারে আর ভাইরাস ছড়াবে না। শনাক্তের হার কমার আরেকটা কারণ হলো, মানুষ আগে ভীত ছিল।
বুঝে উঠতে পারেনি কী করবে। মানুষ এখন অনেকটাই সাধারণ রোগের মতো নিয়ে বাসাবাড়িতে অবস্থান করেই চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে যারা অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত ও বয়োবৃদ্ধ তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন পরিস্থিতি।
তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় ভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। নিউইয়র্কে মাত্র ২০ ভাগ ইমিউনিটি আসছে। তারা একটি গন্ডির মধ্যে সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এতে ৮০ ভাগ মানুষ যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারে।
এটা শীতকালে হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। আমাদের দেশে কিন্তু ভিন্ন। শীতে আমাদের সংক্রমণ কমে যাবে। তবে এ নিয়ে সরকার একটি গবেষণা করতে পারে। তাহলে বাস্তবতাটা আরও বোঝা যাবে।