বিভাগ সারাবাংলা

সত্য বললে আঘাত আসবেই তবুও বলবো : শামীম

সাম্প্রতিক সংবাদ
মুনতাহা মিহীর
Sponsored

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, সত্য কথা বলতে গেলে আবার আমার উপর আঘাত আসবে। তবুও আমি বলব। কারণ সত্য সব সময় সুন্দর। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, সাদাকে সাদা বলবে।

বুধবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ক্যান্সারে আক্রান্ত ক্রিকেটার শাওনকে আর্থিক অনুদান চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে আমি কথা বলেছি। বলব।

সত্য কথা বলতে গিয়ে ও প্রচার করতে গিয়ে নবী, রসূল ও ওলীরা অনেক আঘাতের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারা কি থেমে গেছেন। থামেনি। সেই সত্যে তারা অটল ছিলেন বলেই সফলতা পেয়েছেন। হ্যাঁ, সত্যি বলতে গেলে শক্র বাড়বেই। কিন্তু রাজনীতি আল্লাহর জন্য করি। যে আল্লাহ সকল ক্ষমতার অধিকারী। আর আল্লাহর জন্যই তো এক্সটেনশন লাইফ নিয়ে বেঁচে আছি। কেন না ২০০১ সালে বোমা হামলায় আমার আশপাশে সব মারা গিয়েছিলে। আমি তো আল্লাহর অনুগ্রহে হায়াৎ রেখেছেন বলে বেঁচে আছি। দেখেন কিছুদিন আগে চাক্ষুষ প্রমাণ “রাখে আল্লাহ মারে কে” সেই প্রবাদকে বাস্তবে রূপ দিয়ে ১৩ ঘণ্টা পর পানির নিচেও আল্লাহ একজনকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু খুব কষ্ট হয় এই করোনাকালে কিছু মানুষ দুর্নীতি ও চুরিতে জড়িত। ওই শাহেদদের মত লোকেরা। 

তিনি বলেন, আমাদের সরকার চোর ধরছে। বিচারও করছে। তবে কিছু ডক্টররা বিদেশে গিয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যেন বাংলাদেশের উন্নয়নকে থমকে দেয়া যায়। কিন্তু তা সম্ভব না। কেন না দেশের নেতৃত্বে আছেন শেখ হাসিনা। যিনি ধৈর্য্য ধরতে জানেনও দেশকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় তা জানেন। 

রিজেন্ট হাসপাতলের মালিক আটক সাহেদের সঙ্গে বর্তমানে দেশের জনপ্রতিনিধিদের তোলা ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাহেদের সঙ্গে ছবি দেখে অনেক সমালোচনা চলছে। কিন্তু একটি কথা বলতে চাই। আমরা জনপ্রতিনিধি। কেউ যদি আমদের সাথে ছবি তুলতে চায় তাহলে আমরা সাধারণত ফিরিয়ে দিতে পারি না। যেমন: আমি নিজে মক্কায় ওমরা করতে গিয়ে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছিলাম। ঠিক সেই সময় এক বাঙ্গালি আমার সাথে তাওয়াফ অবস্থায় ছবি তুলতে চায়। পরে আমি তাকে না করতে পারিনি। এসব দেখে মক্কার পুলিশ আমাকে প্রশ্ন করে আমি কে? তারপরে সেই পুলিশ বলে আমিও একটা ছবি তুলব। তুলেছি। 

ভারতীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত রাজীব গান্ধী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখেন রাজীব গান্ধীও একজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তাকে ফুলের মালা গলায় দেয়ার নামে আত্মঘাতী হামলা করে হত্যা করা হয়েছিল। ঘাতক দূর থেকে রাজীব গান্ধীকে ইশারা দিয়ে ফুলের মালা পড়াবে বলে হাত নাড়াচ্ছিল। একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি ওই ঘাতকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। এমনকি রাজীব গান্ধীর নিরাপত্তায় থাকা সদস্যরা অনেকেই ওই ঘাতককে আসতে সমর্থন দিচ্ছিলেন না। কিন্তু রাজীব গান্ধী জনপ্রতিনিধি বলে না করতে পারেনি। ওই সুযোগে ঘটনা ঘটে যায়। ঠিক জনপ্রতিনিধিরা কাউকে না করতে পারে না। কারণ আমাদের নাম জনপ্রতিনিধি। 

জনগণের দাবি না রাখলে কার দাবি রাখবো। এজন্য যে ছবি তুলতে আসে কারো মন ভাঙি না। দেশের করোনাকাল থেকে শুরু করে যে কোন সময় দেশের দুস্থ মানুষদের রক্ষায় আমার কাছেএকটি উত্তম ফর্মূলা রয়েছে। তাহলো যাকাত ফান্ড তৈরি করা। আর তার প্রধান হবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এরপর সর্বজন স্বীকৃত আলেম ওলামা যাদের নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। শিল্পপতি, মিডিয়া, রাজনীতিবদ, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তা সকলকে নিয়ে একটি কমিটি হতে পারে। দেশে ১ কোটি লোক আছে যারা ৫ লাখ করে যাকাত দেয়ার সামর্থ্য আছে। সবার সমন্বয়ে আমার ভূমিহীন ওকর্মহীন মানুষের মধ্যে যাকাত ফান্ড দিয়ে বাড়ি নির্মাণ ও কাজের সংস্থা করতে পারি। এ থেকে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে মানুষ ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাহলে দেখবেন দেশে এক সময় যাকাত দেয়ার লোক খুঁজে পাবেন না।

তিনি দেশের উন্নয়নে উন্নতশীল রাষ্ট্র জার্মান প্রসঙ্গে বলেন, জার্মানে ব্যবসা করতেগিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে এক প্রতিষ্ঠিত জার্মানিকে প্রশ্ন করেছিলাম, তোমরা হিটলারের দেশে হওয়ায় সব দেশ মিলে হামলা শিকার হয়েছিলে। তোমাদের দেশ অর্থনীতিতে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। কিভাবে তোমরা ঘুরে দাঁড়ালে? ওই ব্যবসায়ীর জবাব ছিল-আমরা সেই সময় থেকে দেশকে দাঁড় করাতে এক বেলা রুটি খেয়েছি ও আরেক বেলা খাবারে অর্থ পরের প্রজন্মের জন্য জমিয়ে রেখেছি। এভাবেই আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দেশ কিভাবে দাঁড়াবে। আমার পরে প্রজন্মের জন্য কি কিছু করতে পারছি। কিন্তু হায় আফসোস আমাদের দেশে যে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনেছিলাম। আমার সেই নেতাকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে হত্যা করেছি। সেই বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে আজ তার সুযোগ্য কন্যা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। 

আমি হতাশ হই না সহজে। কিন্তু আমি আশবাদী হয়েছিলাম সেইদিন। কয়েক বছর আগে যখন রাস্তায় শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর সারাদেশের স্কুলের ছাত্ররা জেগে উঠেছিল। আমি মনে করেছিলাম এরা মনে হয় ফেসবুক দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখলাম এদের প্রতিবাদ এবং দেশের প্রতি এদের দরদ ও এদের ন্যায় বিচারের আন্দোলন আমার মন কেড়েছে। এই ছাত্ররা ঢাকা থেকে আসার পথে পথে আমার গাড়ি চেক করে দেখেছে, ঠিক আছে কিনা। যখন দেখেছে ঠিক আছে আমার গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। যে দেশের ওই ছোট ছোট ছাত্ররা গাড়ির ব্লকবুক চেক করতে পারে। আমি সম্পূর্ণ আশাবাদী এদেশের ওই ছাত্ররা দেশের ভবিষৎ কে এগিয়ে নিতে দুর্নীতি চেক করতে পারবে।

সভায় জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ সকলের অনুপ্রেরণায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সকলে সকলে দায়িত্ব পালন করছেন ও করে যাচ্ছেন। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক পুলিশের এ আইজি মালিক খসরু ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটু।

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…

September 21, 2024

২০২৩ এর সফল ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইমন সাদিক

সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…

March 4, 2024

ডিআর কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে  সেনাবাহিনীর ‘আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ মোতায়েন

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…

March 3, 2024

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…

January 12, 2024

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…

January 10, 2024

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…

January 7, 2024
Sponsored