সারা দেশে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সারা দেশের এক হাজার ১৫টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে এই কর্মসূচি।
গতকাল শনিবার বা আজ যাঁদের মোবাইল ফোন নম্বরে টিকা নেওয়ার এসএমএস গেছে বা যাবে, তাঁরাই শুধু আজ টিকা নিতে পারছেন।
মূলত স্বাস্থ্যকর্মীরাই বেশি টিকা নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, তালিকাভুক্ত মনোনীত সম্মুখ সারির ব্যক্তি ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি টিকা পাচ্ছেন।
জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় চার লাখ মানুষ টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম জানান, টিকা দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোথাও যতটুকু ঘাটতি আছে, তাও প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা ও উপেজলায় কয়েকজন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা টিকা নেবেন এবং টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
গত ২০ জানুয়ারি দেশে প্রথম ২০ লাখ ডোজ টিকা আসে, যা ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। পরে ২৫ জানুয়ারি সরকারের কেনা টিকা থেকে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসে। সরকারের হাতে আছে প্রায় ৭০ লাখ টিকা।
কোভিশিল্ড নামের এই টিকা অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এই টিকা উৎপাদন করছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছে।
দেশে প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২৭ জানুয়ারি, উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিনে টিকা নেন ২৬ জন। দেশে প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। পরদিন রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ পাঁচ শতাধিক কর্মীকে টািকা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ সারা দেশে যেসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, এর সবগুলোই সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট বুথ বা দল থাকছে এক হাজার ৪০২টি। অর্থাৎ একেকটি টিকাদানকারী দল একটি বুথ হিসেবে কাজ করছে। প্রতি বুথে থাকছেন দুজন টিকাদানকর্মী ও দুজন স্বেচ্ছাসেবক।
টিকাদানকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন নার্স, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা সেকমো। আর স্বেচ্ছসেবকের দায়িত্বে রয়েছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ আরো কিছু সংগঠনের কর্মীরা। টিকাদানকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকায় ৫০টি কেন্দ্রে আজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২১ ও দক্ষিণে ২৯ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে ২০৬টি টিম কাজ করছে।
আজ প্রধান বিচারপতি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রীয় ও সরকারি উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য টিকা নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, বাণিজ্যমন্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেনের টিকা নেওয়ার কথা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে। মন্ত্রিপরিষদসচিবের টিকা নেওয়ার কথা শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে।
এ ছাড়া ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন কেন্দ্রে আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন টিকা নিচ্ছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), রংপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, ও সিভিল সার্জন। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে শুরুতেই টিকা নেবেন জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি পদস্থ কর্মকর্তারা। ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৬টি কেন্দ্রের ৫০টি বুথে টিকা দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার নিবন্ধন হয়েছে। প্রথম দফায় তিন লাখ ২৪ হাজার ডোজ টিকা ময়মনসিংহে পৌঁছেছে।
খুলনায় গতকাল টিকা নিয়ে সব ধরনের গুজব প্রতিরোধ এবং সর্বস্তরে টিকাদানের নিশ্চয়তা দাবি করে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ‘ভয়েস ফর ভ্যাকসিন’।
আজ খুলনা মহানগরে ১৩টি এবং প্রতিটি উপজেলায় তিনটি করে মোট ৪০টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র খুলনা মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টায় টিকা নিয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
বগুড়ায় ১২টি উপজেলায় প্রথম দফায় করোনার টিকা বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি টিকা পাবে সদর উপজেলার বাসিন্দারা।
সবচেয়ে কম পাচ্ছে দুপচাঁচিয়া উপজেলা। জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, গত ২৯ জানুয়ারি জেলায় করোনার ১০ হাজার ৮০০ ভায়াল এসে পৌঁছেছে।
বান্দরবানেও আজ থেকে টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে নিবন্ধন করেছেন। জেলার সিভিল সার্জন ডা. অং শুই প্রু মারমা জানান, প্রথম দফায় বান্দরবানে ১২ হাজার ডোজ টিকা এসেছে।
হবিগঞ্জে টিকা নেওয়ার জন্য এক হাজার ৫০০ জন নিবন্ধন করেছেন। আজ জেলার ২৪টি বুথে আড়াই শ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোখলেছুর রহমান উজ্জল জানান, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথম দিনেই টিকা নেবেন। জেলায় ৭২ হাজার ডোজ টিকা এসেছে।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় ১৩ হাজার ৩৭০ ডোজ টিকা পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জিল্লুর রহমান।
ঢাকা, ২৪ আগস্ট ২০২৫: পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. ফাইজুর…
বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের…
"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড"…
আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের…
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
Leave a Comment