চলতি অর্থবছর ৭ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার এবং ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সারও আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের বাইরে থাকায় সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদন যাতে ব্যহত না হয় সেলক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ বিশেষ করে সার আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানি করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বলেন, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের চুক্তিবদ্ধ ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষমতা শিল্পমন্ত্রীকে প্রদানের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তিনি জানান, এর মধ্যে ৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব কমিটির সভায় দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিমাসে অন্তত দুটি করে আরও ১৭ টি লটে বাকী সার আমদানি করা হবে।
কানাডিয়ান কমার্সিয়ার কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায়া এমওপি সার আদানির প্রস্তাব অনুমোদিতে হয়েছে। এ প্রস্তাবের আওতায় ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্টিক টোন সার সরবরাহ করবে কানাডিয়ান কমার্সিয়ার কর্পোরেশন। সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় প্রোকিউরমেন্ট অব ইকুইপমেন্ট ফর ইমপ্লিমেনটেশন অব প্রি-ভোকাশিয়াল এ্যান্ড ভোকাশিয়াল প্রোগ্রাম সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
৯৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জয়েনভেঞ্জারে এসব পণ্য সরবরাহের কাজ পেয়েছে ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড বলে জানান নাসিমা বেগম।বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়াদী চুক্তির আওতায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা তেল আমদানি করবে সরকার।
মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প শীর্ষক প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অংশের ডিজাইন, টেন্ডার অ্যাসিসটেন্স এবং কনস্ট্রাকশন সুপারভিশনের জন্য পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এক্ষেত্রে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে জাপানের নিপ্পন সিনো কোম্পানি লিমিটেডকে। এতে সরকারের খরচ হবে ২৩৪ কোটি তিন লাখ টাকা।
জাইকার অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেও জানান তিনি। নাসিমা বেগম আরও জানান, সভায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘কক্সবাজার জেলাধীন ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডারসমূহের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ পুননির্মাণ ও প্রতিরক্ষামূলক কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। আগে এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এখন এক কোটি ৬১ লাখ টাকা বেড়ে এ কাজে ব্যয় দাঁড়াল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের দুটি প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। ২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব পণ্য সরবরাহের কাজ পেয়েছে বিআরবি ক্যাবলস লিমিটেড।
বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযো শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। ১৫৪ লাখ ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ পেয়েছে একতা পাওয়ার লিমিটেড, ভিকার ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড এবং পাসা ট্রান্সফারমার লিমিটেড।