শতাব্দীর ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারী করোনায় চট্টগ্রামের ৬ ল্যাব, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৭৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন করে আরো ১১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনামুক্ত হয়েছেন আরো ৭৫ জন। করোনায় মারা গেছেন আরো ১ জন।
আজ ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামের ৬টি ল্যাবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৭৭১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে নগরীর ৮৭ জন ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২৫ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোটimageআক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ২১৩ জনে। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরো ৭৫ জনসহ মোট ২ হাজার ১৮৭ জন। আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৩০ জন।
এদিকে ৭৭১ জনের নমুনা পরীক্ষার মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। তার মধ্যে নগরীর ৭ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ২০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত হয় আরও ২৭ জন। এর মধ্যে নগরীর ২৬ জন উপজেলার ১ জনের পজিটিভ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৯৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২৩ জন নগরীর ও ৫ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় কারো দেহে করোনা শনাক্ত হয়নি।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় কারো দেহে করোনা শনাক্ত হয়নি। এছাড়া বেসরকারি ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ১৫৯ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জন শনাক্ত হয়। তার মধ্যে নগরীর ১৩ জন, জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৪ জন পজিটিভ। বেসরকারি শেভরনে ৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে নগরীর ১৮ জন ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২ জন।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২৫ জন শনাক্ত হয়েছে। সেগুলো হল- লোহাগাড়া ১ জন, আনোয়ারার ১ জন, চন্দনাইশ ১ জন, পটিয়ার ১ জন, রাঙ্গুনিয়া ১ জন, রাউজানের ১০ জন, ফটিকছড়ির ২ জন, হাটহাজারীর ৫ জন এবং সীতাকুণ্ড ৩ জন।
অপর এক হিসেবে চট্টগ্রামে পুরুষরাই বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত ১৪ হাজার ১০১ জনের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ২৯৮ জন। আর বাকি তিন হাজার ৮০৩ জন মহিলা। মোট আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৭৩ ভাগ, নারী ২৭ ভাগ। চিকিৎসকেরা বলছেন, পুরুষরা ঘরের বাইরে যাচ্ছেন। এই কারণে তাদের মধ্যে সংক্রমণ হচ্ছে বেশি। কর্মজীবী নারীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার আক্রান্ত ঘরের পুরুষ সদস্যের সংস্পর্শে এসেও অনেক নারী আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হারে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬৮ শতাংশ। তবে তাদের সুস্থতার হারও বেশি।
গতকাল হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন আরো ৬৮ জন। এ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ১১২ জন। বাসায় থেকে সুস্থ হয়েছেন আরো সাত হাজার ২৭ জন। মোট সুস্থ ৯ হাজার ১৩৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১০০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আরো ১১৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১১ শতাংশ। চট্টগ্রামে করোনার শয্যা খালি আছে ৭০৫টি আর আইসিইউ খালি ৩৭টি।