করোনা দুর্যোগে পুলিশ বাহিনীর সেবার প্রশংসা করছেন যখন সাধারণ মানুষ ঠিক ঐ সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর সিএমপির সদরঘাট থানার ওসি, চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার কৃতি সন্তান ফজলুর রহমান ফারুকীসহ ১৩ পুলিশ সদস্য করোনা যুদ্ধে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত আক্রান্ত হয়েছেন।
জানা যায়, বুধবার রাতে আগের ২৪ ঘণ্টার করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন জানানো হয়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে। এ দিন চট্টগ্রাম নগর ও জেলা মিলে সর্বমোট ৯৫ জন আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে নগরের সদরঘাট থানার অফিসার ইনচার্জসহ ১০ পুলিশ সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়।
নগর পুলিশ সূত্র জানান, সদরঘাট থানার ওসি ফজলুর রহমান ফারুকীসহ বেশ কয়েকজন সদস্য করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। গত সপ্তাহে সদরঘাট থানার মুন্সী ওই থানায় প্রথম কভিড-১৯ আক্রান্ত হন।
এরপর বুধবার অন্যদের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বুধবার ১৩ পুলিশসহ এ পর্যন্ত নগর পুলিশের মোট ৪৪ জন সদস্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন সুস্থ হয়েছেন। অন্যরা চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে করোনার হটস্পট জেলা নারায়ণগঞ্জে গত দুইমাস ধরে চরম ঝুঁকির মধ্যেও দৃঢ়তার সাথে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ বাহিনী। জেলায় কোন পুলিশ সদস্য মারা না গেলেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেক সদস্য। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন অনেকেই। জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, কর্মক্ষেত্র সুরক্ষিত করার পাশাপাশি পুলিশের মনোবল বাড়াতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শিল্পসমৃদ্ধ জেলা নারায়ণগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির অবনতির ফলে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুরু থেকেই প্রথমসারির যোদ্ধা হিসেবে রাজপথে কাজ করছেন পুলিশবাহিনী। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জনবল না থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন করা, খাবার পৌঁছে দেয়া ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এসব সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন পুলিশ সদস্যরা।
তবে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য জেলা পুলিশ লাইনস এবং শহরের এ কে এম সামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহা।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি পুলিশের মনোবল বৃদ্ধিতে নানাভাবে মানসিক শক্তি জোগানো হচ্ছে।
পুলিশ সুপার জানান, এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ জন পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন ৭ জন। জেলার ৭টি থানা ও পুলিশ লাইনসের অধীনে কাজ করছেন দুই হাজার দুইশো পুলিশ সদস্য।