শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ, জ্বরসহ নানা উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বয়স্ক রোগীরা। করোনায় প্রবীণদের মৃত্যুহার যেমন বেশি, তেমনি আক্রান্তের হার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা ও সচেতনতা কম থাকায় বয়স্করা করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক।
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘন্টায় নতুনভাবে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৬৭ জনের শরীরের। এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ১১ হাজার ৭৬৪ জন। যাদের মধ্যে নগরেই আট হাজার ১৯০। আর বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে তিন হাজার ৫৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে কেউ মারা না যাওয়ায় মোট মৃত্যু সংখ্যা ২১৬ জনেই স্থির আছে, যাদের মধ্যে ১৫৩ জন নগরের ও ৬৩ জন উপজেলার বাসিন্দা। অন্যদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন আরও ১৭ জন। ফলে এখন পর্যন্ত একহাজার ৪১৪ জন রোগী করোনাজয় করলেন।
আজ ১৩ জুলাই মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান,চট্টগ্রামের সরকারি চারটি ও বেসরকারি দুটি ল্যাব এবং কক্সবাজারের একটি ল্যাবের মধ্যে নমুনা না পাওয়ায় সিভাসু ল্যাবে কোন পরীক্ষা হয়নি। ফলে সাত ল্যাবের মধ্যে ছয় ল্যাব মিলিয়ে মোট ৮৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যা আগেরদিনের চেয়ে ২৫৯ টি বেশি। পরীক্ষায় আরও ১৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে নগরের ৯৬ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৭১ জন। একইসাথে চট্টগ্রামে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৭ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যাননি।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)-তে আগেরদিনের চেয়ে ৫০টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়। ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ২৩ জন। এর মধ্যে ১২ জন নগরের। বাকি ১১ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
টানা তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হওয়ার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়, যাদের ২০ জন নগরের ও ৫ জন উপজেলার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে কিছুটা বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট ১৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন ৪০ জন। যাদের ১১ জন নগরের ও ২৯ জন বিভিন্ন উপজেলার।
অন্যদিকে, বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে দিনের সর্বাধিক ২৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দিনের সর্বোচ্চ ৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। যাদের ২৯ জন নগরের, বাকি ১৫ জন বিভিন্ন উপজেলার।
আগেরদিন পরীক্ষার তথ্য পাওয়া না গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় শেভরণ ল্যাবে ১১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করার তথ্য পাওয়া যায়। তাতে করোনা শনাক্ত হয় ৩১ জনের শরীরে। যাদের মধ্যে ২৪ জন নগরের ও ৭ জন বিভিন্ন উপজেলার।
এদিন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে উপজেলার ৪ জন রোগী শনাক্ত হয়।
উপজেলা পর্যায়ে নতুনভাবে করোনা শনাক্ত ৭১ জনের মধ্যে অনেকদিন পর শীর্ষস্থান থেকে হাটহাজারীকে সরালো রাউজান। সেখানে ১৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। দিনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা রোগীর খোঁজ মেলে চন্দনাইশে, ১৩ জন। এছাড়া ফটিকছড়িতে ১২ জন, হাটহাজারীতে ৭ জন, বোয়ালখালী ও আনোয়ারায় ৫ জন করে, পটিয়ায় ৪ জন, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, মীরসরাই ও সীতাকুণ্ডে ২ জন করে এবং সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে ১ জন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।