নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছে নারী-শিশু নির্যাতন ও সন্ত্রাস ইভটিজিং প্রতিরোধ কমিটি ব্যানারে এলাকার গনমানুষ।
আলাইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদ, চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সড়কে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা ইউপি চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এর আগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে মাদরাসাছাত্রীকে একাধিকবার গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও অপহরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী বিউটি আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে বিউটি নিজের মেয়েকে জোরপূর্বক যৌন ব্যবসায় বাধ্য করে। মামলায় বিউটি ছাড়াও আলাইয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানসহ আরো পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, মামলায় অভিযুক্ত ১ নম্বর আসামি গত বৃহস্পতিবার রাতে তার মেয়েকে ধর্ষণ, বিবস্ত্র করে ছবি ধারণ ও অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চারজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে আসামি ফয়সাল, সাইফুল ইসলাম ইমন ও জোবায়েরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার সাভারের পূরগাও এলাকার রুবি নামের একজনের বাসা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ভিকিটিম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ এ বিচারকের কাছে স্বেচ্ছায় ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
পুলিশ আরো জানায়, জবানবন্দি ও মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানা গেছে ২০১৮ সালে ভিকটিম ধীতপুর দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। ২০১৭ সাল থেকে ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত ভিকটিমকে দিয়ে তার মা বিউটি আক্তার জোর করে টাকার বিনিময়ে দেহ-ব্যবসা করাতো। বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের মেয়েকে কখনো নিজ বাড়িতে, কখনো ঢাকা-চট্টগ্রামে যৌন কাজের জন্য পাঠাত বিউটি।
বিষয়টির প্রতিবাদ করলে কয়েকবার ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে মারধর করে বিউটি। আগের মামলার সাক্ষী ও বর্তমান মামলার আসামি মোজ্জামেল হোসেন বিউটিকে টাকা দিয়ে ঘরে এসে ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতো। একরাতে মোজাম্মেলের সঙ্গে যৌন কাজে লিপ্ত হলে স্থানীয় ফয়সাল ও জোবায়ের দেখে তাদের দুইজনের বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে।
পরে তারা মোজাম্মেলকে বের করে দিয়ে ওই রাতে ভিকটিমকে গণধর্ষণ করে ফয়সাল ও জোবায়ের। পরে বিউটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার বাড়িতে পাঠায় ওই ছাত্রীকে। চেয়ারম্যান আনিস নিজ বাড়িতে রেখে একাধিকবার মিলিত হন ভিকটিম এর সাথে।
এদিকে বিষয়টিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে জানায় স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতারা। তারা বলেন, চেয়ারম্যান আনিস অত্যন্ত নিষ্ঠ ও কর্তব্যপরায়ণ। তার বিরুদ্ধে আনিত এইসব অভিযোগের সুনির্দিষ্ট কোনো ভিত্তি নেই। তথ্য প্রমাণ ছাড়া কারো বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণদিত বক্তব্য নিন্দনীয় ও শিষ্ঠাচার বহিঃভূত।