দেশটা কৃষকের, কাজটা সকলের’ এই শ্লোগানে করোনা পরবর্তী খাদ্য সংকট মোকাবেলায় পাবনায় নিজস্ব সকল পতিত জমি ও জলাশয়কে আবাদযোগ্য করার ব্যাতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ।
অব্যবহৃত পড়ে থাকা খালি জমিতে সবজি ও জলাশয়ে মাছ চাষের জন্য চলছে সংস্কার কাজ। এসব জমিতে উৎপাদিত খাদ্য পুলিশ সদস্যদের চাহিদা মিটিয়ে বিতরণ করা হবে সাধারণ মানুষের মাঝেও। এ সব কাজ তদারকির জন্য পাবনা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) খন্দকার রবিউল আরাফাত কে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তার অধীনে পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশত মানুষ ঘাসকাটাসহ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান জানান, করোনা পরবর্তী খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাড়াতে হবে খাদ্য উৎপাদন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাগিদ দিয়েছেন দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় আনার। সে নির্দেশনা মেনে নিজেদের দখলে থাকা পতিত জমি খাদ্য উৎপাদনের উপযোগী করতে মাঠে নেমেছে পাবনা জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও এর আশেপাশের ছয় বিঘা খালি জমির ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে চলছে শাক সবজি বোনার প্রস্ততি। পরিত্যাক্ত জলাশয়গুলোও সংস্কার করে ছাড়া হয়েছে মাছের পোনা। কৃষি শ্রমিকের পাশাপাশি রুটিন কাজের বাইরে পুলিশ সদস্যরাও স্বেচ্ছায় অংশ নিচ্ছেন এসব কাজে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, কেবল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ই নয় জেলার দশ থানা, সকল ফাঁড়ি ও অভিযোগ কেন্দ্রের পাশের খালি জমিকে আবাদযোগ্য করে ফসল রোপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ীর আশেপাশের পতিত জমি কাজে লাগাতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার পরিকল্পনাও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, পাবনায় কেবল জেলা পুলিশের অধীনেই রয়েছে প্রায় ত্রিশ বিঘা পতিত জমি ও জলাশয় । সকল সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হিসাবটা কয়েকশ বিঘা ছাড়াবে। এই বিপুল পরিমান জমিকে উৎপাদনমুখী করতে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, দেশের সকল সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের খালি জমিকে কৃষি আবাদের আওতায় আনা হলে উৎপাদিত ফসল খাদ্য নিরপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে। নিশ্চিত হবে অব্যবহৃত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার। তিনি বলেন, পাবনা জেলা পুলিশের এই মডেল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে করোনা পরবর্তি খাদ্য সংকেটর ঝুঁকি মোকাবেলা সম্ভব হবে।
পাবনা নাগরিক সমাজের সভাপতি আব্দুল মতীন খান বলেন, পুলিশের এই উদ্যোগ সত্যই প্রশংসনীয়। এটি বাস্তবায়ন হলে পুলিশ সদস্যসহ পাবনার মানুষ উপকৃত হবে।