পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক; ভোরবেলা, তখনো সূর্য ওঠেনি। কেউ বের হয়েছেন প্রাতঃভ্রমণে, কেউ গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে। এর মাঝে ভবনের ছাদ ও বৈদ্যুতিক তারে ঝাঁকে ঝাঁকে শালিক পাখির অপেক্ষা; কখন আসবেন তিনি, কখন দেবেন খাবার।
অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে বস্তাভর্তি চানাচুর নিয়ে হাজির হলেন তিনি। উৎফুল্ল শালিকের দল। কিচিরমিচির ডাকে ছুটোছুটি, হুড়োহুড়ি। এরপর পেটপুরে চানাচুর খেয়ে ছুটে চলা দিগ্বদিক। এ এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
শত শত শালিক পাখিকে খাওয়ানোর এই বিরল দৃশ্যের দেখা মেলে প্রতিদিন ভোরে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে শ্যামল দই ভাণ্ডারের সামনে। ছয়/সাত বছর ধরে শালিক পাখির এভাবে আপ্যায়ন করে চলেছেন শ্যামল দই ভাণ্ডারের মালিক সমর কুমার ঘোষ।
সমর কুমার ঘোষ ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক, প্রতিদিন ভোরে চানাচুরের বস্তা নিয়ে ঠিক হাজির হয়ে যান।
আলাপকালে তিনি জানান, খুব ভোরে দোকানে আসতে হয় তাকে। একদিন দোকানের সামনে কয়েকটি শালিক পাখিকে খাবারে জন্য চেঁচামেচি করতে দেখে তাদের চানাচুর খেতে দেন। পর দিন থেকে খাবারের জন্য পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। তিনিও খাবার দেন আনন্দচিত্তে। এভাবে শালিকের সঙ্গে তার সখ্যতা তৈরি হয়। এখন প্রতিদিন শত শত শালিক এসে কয়েক শত টাকার চানাচুর খেয়ে যায়। এই কাজটি তিনি করছেন ছয়/সাত বছর ধরে।
শালিক পাখির খাওয়ানোর এই আয়োজন যাতে চালু থাকে, সেই উদ্যোগ নিয়েছেন সমর কুমার। তার অনুপস্থিতিতে কখনো তার সন্তান, স্বজন অথবা দোকানের কর্মচারীরা পাখির খাবার দেন। তিনি আশা করেন, দেখাদেখি অন্যরাও এগিয়ে আসবেন।
সমর কুমারের এই কাজকে সাধুবাদ জানান অনেকে।