উন্নত জীবনের আশায় প্রতিবছর কয়েক লাখ মানুষ পাড়ি জমান প্রবাসে। তবে সবার পক্ষে বিদেশ যাওয়ার টাকা যোগান করা সম্ভব হয়না। এসব অসচ্ছল শ্রমিকদের স্বপ্ন পূরণ করতে সহযোগিতা করছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। মাত্র তিনদিনে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকটি।
জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৪০০ বিদেশগামী কর্মীকে অভিবাসন ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। বর্তমানে সারাদেশে এ ব্যাংকের ৬৩টি শাখা রয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের সব জেলায় শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
ঋণ নেয়ার শর্ত
১. আবেদনকারির অনুপস্থিতিতে তার ঘনিষ্ঠজনকে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।
২. অভিবাসন ঋণ নেয়ার জন্য জামিনদারের অবশ্যই আর্থিক সচ্ছলতা থাকতে হবে।
অভিবাসন ঋণ পাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা: এ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য প্রথমে ভিসা পেতে হবে। এরপর ঋণ গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় ভিসার ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর জমা দিতে হবে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে যাচাই করে আবেদনকারীকে ব্যাংক থেকে ফোন বা এসএমএস করে জানানো হবে।
ভিসার তথ্য সঠিক হওয়ার পর
১. অভিবাসন ঋণ নেয়ার জন্য আবেদন ফরমের আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করতে হবে।
২. নমুনা অনুযায়ী আবেদন করার পরে অভিবাসন ঋণের আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
৩. আবেদনকারীর সদ্য তোলা তিন কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি, ভিসা ও লেবার কন্ট্রাক্টের ফটোকপি, শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি, এজেন্সী থেকে সম্ভাব্য যাত্রার তারিখসহ প্রত্যায়ন পত্র জমা দিতে হবে।
৪. বিমান টিকেটের ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), ঋণ ফেরত দেয়া সংক্রান্ত হলফনামা এবং ভিসার যথার্থতা বিষয়ে বিএমইটি’র প্রত্যায়ন জমা দিতে হবে।
৫. জামিনদারদের প্রত্যেকের সদ্য তোলা দুই কপি করে সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে।
৬. জামিনদারদের যে কোন এক জনের ব্যাংক একাউন্টের চেকের তিন পাতা জমা দিতে হবে।
৭. ঋণ নেয়ার সময় আবেদনকারিকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে।
৮. প্রবাসীর আয়
হওয়া রেমিটেন্স এ সঞ্চয়ী হিসাবের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করতে হবে।
৯. কর্মীকে বীমা সুবিধা নিতে হবে।
ঋণ পরিশোধের নিয়মাবলী
১. অভিবাসন ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার শতকরা ৯ শতাংশ।
২. পরিশোধের দিন থেকে সর্বোচ্চ দুই মাস গ্রেস পিরিয়ড দেয়া হবে।
৩. দেশ ভেদে ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২ বছর। যা ২২টি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। যেমন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহারাইন, মরিশাস, ব্রুনাই, কাতার, ইতালি, ইউরোপের ক্ষেত্রে দুই বছর।
৪. সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে ১০ কিস্তিতে ১ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।