১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনীর একটি প্রশিক্ষিত গেরিলা দল এই দিনে (৭১ সালের ১১ নভেম্বর ) বাংলাদেশে প্রবেশের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বেতিয়ারা নামক স্থানে শহীদ হন নয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধা : শহীদ নিজামউদ্দিন আজাদ, শহীদ সিরাজুম মুনীর জাহাঙ্গীর, শহীদ বশিরুল ইসলাম (বশির মাস্টার), শহীদ শহীদুল্লাহ্ সাউদ, শহীদ আবদুল কাইউম, শহীদ আওলাদ হোসেন, শহীদ আবদুল কাদের, শহীদ মোহাম্মদ সফি উল্ল্যা। স্থানীয় মানুষ ধানক্ষেত থেকে শহীদদের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সমাহিত করেন।
২৮ নভেম্বর ১৯৭১ চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদীঘি অঞ্চল শত্রুমুক্ত হওয়ার পর এই বীরদের গণকবরের ওপর স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং পাশেই নির্মিত হয় শহীদ স্মৃতিসৌধ। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহাসড়ক পুনর্নির্মাণকালে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে আধুনিক শৈলীতে গণকবরটি পাকা করে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর ১১ নভেম্বর শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বেতিয়ার দিবস পালন করা হয়।
বেতিয়ারা প্রান্তরে সেই রাতে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার কাছে দিনটির গুরুত্ব বিশেষ আবেগ ও অনুভূতির। বেতিয়ারা দিবস স্মৃতি চিরন্তন হয়ে আমাদের উজ্জীবিত করে যাবে অনন্তকাল। এই দিনটি সব মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সহযোদ্ধারা স্মৃতিচারণের পাশাপাশি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শমিত জামান, সাংবাদিক কলামিস্ট