মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ১ এপ্রিল ১৯৭১ঃ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী কামান ও মেশিনগানে সজ্জিত হয়ে এক সশস্ত্র কনভয় ঝিনাইদহের বারো বাজার ও কালীগঞ্জ দখল করে মহকুমা শহরের দিকে এগিয়ে আসে। এখানে মুক্তিকামী জনতা পাকবাহিনীকে বাঁধা দেয়। বিষয়খালীর কাছে বেগবর্তী নদীর দক্ষিণ তীরে দুপুর ১টার দিকে উভয়পক্ষ সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন যশোর সেনানিবাস ফেরত ইপিআর ও বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোয়ানরা, আনসার বাহিনীর সদস্য এবং মুক্তিপাগল হাজার হাজার ছাত্র জনতা। এই যুদ্ধে নেতৃত্বে দেন এস.ডি.পি.ও মাহাবুব উদ্দিন। অসিম সাহসের কাছে হানাদার বাহিনীর কামানের গোলা ব্যর্থ হয়ে যায়। তারা বাধ্য হয়ে ফিরে যায় ক্যান্টনমেন্টে। ঝিনাইদহ থাকে মুক্ত এলাকা। এ দিন বিষয়খালী যুদ্ধে নিহত হন দুঃখী মাহামুদ, সদর উদ্দিন, আব্দুল কুদ্দুস, খলিলুর রহমান, গোলাম মোস্তফা, নজির উদ্দিন, এনামুল হক ও কাজী বদিউল ইসলাম। ঝিনাইদহের অমিত তেজি দামাল তরুন দল বাংলাদেশের ইতিহাসে যুদ্ধ বিজয়ের গৌরবে প্রথম মাইল ফলক স্থাপন করে বিষয়খালী যুদ্ধে। এ যুদ্ধের কাহিনী প্রথম বিদেশী রেডিও বিবিসি, ফরাসি বার্তা সংস্থা, অস্ট্রেলিয়া রেডিও, এবিসিসহ বিশ্বব্যাপী প্রচার মাধ্যম গুলোতে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয় ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর তথ্য মতে, আজ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও পাহাড়ের ওপর অবস্থানকারী পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সংঘাত মারাত্মক আকার ধারণ করে। তীব্র আক্রমণের মুখে মুক্তিসেনাদের অবস্থান ছেড়ে দিতে হয় এবং রাতে মুক্তিসেনারা কালুর ঘাটে চলে আসে।
সন্ধ্যায় ইপিআর-সহ মুক্তিবাহিনী টাঙ্গাইল থেকে নাটিয়াপাড়া গিয়ে ঘাঁটি স্থাপন করে।
পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের মুখে দলে দলে লোক নিজ মাতৃভূমি বাংলার সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়।
সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পাকিস্তান কর্তৃক সামরিক সাহায্য চুক্তির শর্তাবলি লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও জাতিসংঘকে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও মানবিক সমস্যাগুলোর সমাধানকল্পে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে বিল্ডিং এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ইপিআর বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে।
নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী আকবরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বগুড়ার আড়িয়াল বাজারে অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনীর ‘অ্যামুনিশন ডাম্প’ আক্রমণ করে। এতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনসহ ২৪ জন সৈন্য ও তাদের পরিবার আত্মসমর্পণ করে।
রাতে ক্যাপ্টেন মতিয়ুর, সুবেদার ফরিদ, ইপিআর বাহিনীর ৬০ জনের মতো জওয়ান ও অন্যান্য সৈন্য নিয়ে ‘ডাঙ্গা’ নামক স্থানে ‘হাইড আউট’ বসিয়ে র্৩র্ মর্টার দিয়ে রামপুরায় অবস্থানকারী পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর