সাম্প্রতিক শিরোনাম

ওরা পারেনি, আমরা পারবো, ঘরে থাকাই সেরা চিকিৎসা -মোহাম্মদ হাসান

আমাদের সকলকেই মনে রাখতে হবে, পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মৃত্যুর এক হানাদার। সুনামির মতো সে আছড়ে পড়ছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে। তার হানায় মানুষের প্রাণ ঝরে পড়ছে গাছের পাতার মতো। তাকে রুখতে না পারলে আমরা, মানে এই মনুষ্য প্রজাতি, সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে। চোখের সামনে হিসেবটাকে টাঙিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন দেখতে হবে কীভাবে করোনা দ্রুতগতিতে গ্রাস করছে আমাদের শক্তি, আমাদের আধিপত্য, আমাদের সবকিছু। সারা বিশ্বে মৃত্যু সংখ্যা কিন্তু ৩৮ হাজার পেরিয়ে গেছে। যেসব দেশে হু হু করে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, সেগুলি কিন্তু মহা শক্তিধর দেশের তালিকায় পড়ে। তাদের অর্থ প্রাচুর্যও আমাদের থেকে অনেক বেশি। তাদের বিজ্ঞান কিংবা চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের থেকে অনেক উন্নত। তা সত্ত্বেও তারা মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে পারেনি। তাদের এতটা অসহায় অবস্থা আমরা কোনওদিন দেখিনি। এখান থেকেই আমাদের মতো দেশকে শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষা নিতে হবে আমাদের দেশের মানুষকে। না শিখতে পারলে, ওদের মতোই আমরাও শামিল হব মৃত্যুর মিছিলে। কেউ আটকাতে পারবে না। তবে আমরা কিছুটা সাবধান হয়েছি। এখন অনেক কিছুই অনেকে মেনে চলছি। কিন্তু আমাদের এখনও অনেকটাই সাবধান হতে হবে। সবাই আমরা যথার্থ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি না।
ইতালির দিকে যদি আমরা তাকাই, স্পেনের দিকে যদি তাকাই। কিংবা আমেরিকা, ফ্রান্স, বেলজিয়াম বা ব্রিটেন! আমরা দেখতে পাই কী বিবর্ণ সব চিত্র। অসহায়ভাবে, বিনা প্রতিরোধে মানুষ মরে যাচ্ছে। কোনও চিকিৎসা নেই। খাড়া ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যু ও আক্রান্তের রেখচিত্র। যে ট্রাম্প একেবারে গোড়ার দিকে লকডাউনের প্রস্তাব ফু দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, তিনিও আজ ভয়ে কম্পমান। পৃথিবীর স্বঘোষিত এক নম্বর শক্তিমান দেশের শক্তির অহঙ্কার আজ ধুলোয় লুটোপুটি খাচ্ছে। এখন আমেরিকায় মৃত্যুর হার ঘণ্টায় ১৪ জন। ইতালির মতোই এক পরিস্থিতির দিকে এগচ্ছে আমেরিকা। প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার খেসারত দিয়ে আজ আমেরিকা হাঁটছে ইতালির পথেই। আমেরিকায় প্রতি ৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষ ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর কোলে। এখন তাকে এভাবেই ভুলের প্রয়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।
পাশাপাশি, ইরান, পাকিস্তানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। আবার নতুন করে তা ছড়িয়ে পড়ছে চীনের হুবেই, উহান ও হেনান প্রদেশে। ওদিকে রাশিয়ার অবস্থাও ভালো নয়। ঠিক এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা কিন্তু দেরি করে ফেলিনি। আমরা কিন্তু সময়মতোই কোমর বেঁধে মোকাবিলায় নেমেছি। এখন দরকার, শুধু দেশের মানুষের সহযোগিতা। তাঁরা যদি সরকার এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলেন,স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেন, তাহলে কিন্তু আমাদের দেশ আর একটা ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন কিংবা আমেরিকা হবে না।
এখনও বাজারে গেলে দেখা যাবে, লাইন দিয়ে বাজার, দোকানপাট চলছে। রাস্তায় রাস্তায় বাইক, সাইকেল দিব্যি চলছে। স্রেফ ‘একটু ঘুরে দেখে আসি’ মানসিকতা নিয়েই তাঁরা বেরিয়ে পড়ছেন। বোঝাই যাচ্ছে, অনেকেরই কোনও হেলদোল নেই। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। দিব্যি আগের মতোই চলছে যেন। এরাই কিন্তু আমাদের দেশে করোনার মৃত্যুবীজকে ছড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছি। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছেন সেনাবাহিনী। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নিজে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মানুষকে সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করছেন, কীভাবে সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলবেন, তা তিনি বারংবার ভাষণে ও ভিডিও কনফারেন্সে বলে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে ভবঘুরে ও দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পাশাপাশি সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নানা পদক্ষেপ নিয়ে করোনাকে ঠেকানোর চেষ্টা করে চলেছেন। গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে মানুষকে সচেতন করণে নানাভাবে তুলে ধরেছেন এবং তিনি এটাও বলেছিলেন দূর্যোগে মনুষ্যত্বের পরীক্ষা হয়। তিনি বলেছেন, মানবিকতা বজায় রেখে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে। এখনও এসব কানে না গেলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে বাধ্য। পশ্চিমা দেশগুলির অবস্থা দেখে আমাদের শিক্ষা নিতেই হবে। যে রোগের ওষুধ নেই, তাকে কাছে আসতে না দেওয়াই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই ঘরে থাকাটাই সেরা চিকিৎসা।
লেখকঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...