গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার পেপারবুক হাইকোর্টে পৌঁছেছে।
তেজগাঁওয়ের সরকারি ছাপাখানায় পেপারবুক ছাপা হয়ে গত রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
হলি আর্টিজানে হামলা ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের পর ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর জঙ্গিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স।
১৩৪ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ মোট ২৩০৭ পৃষ্ঠার নথি (মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, অভিযোগপত্রসহ) পাঠানো হয় হাইকোর্টে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলাটির বিচারকাজ শুরুর জন্য পেপারবুক তৈরি করতে মামলার নথি পাঠায় বিজি প্রেসে।
আলোচিত এই মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ায় হাইকোর্টে বিচার কার্যক্রম শুরুর পথ সুগম হলো। নিয়ম অনুযায়ী এখন প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। এর পরই শুরু হবে বিচারকাজ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো গাইবান্ধার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, নওগাঁর আসলাম হোসেন ওরফে আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ওরফে র্যাশ, কুষ্টিয়ার আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, জয়পুরহাটের হাদিসুর রহমান সাগর, বগুড়ার রাকিবুল হাসান রিগ্যান ও মামুনুর রশীদ রিপন এবং রাজশাহীর শরিফুল ইসলাম খালেদ। খালাস পাওয়া আসামি হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
তদন্তে ২১ জঙ্গি জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। তাদের মধ্যে পাঁচজন ঘটনার সময় সেনা কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়। এ ছাড়া নব্য জেএমবির প্রধান সমন্বয়কারী তামিম চৌধুরীসহ আটজন হামলা পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল বলে তদন্তে পাওয়া যায়।
আটজন বিভিন্ন সময় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ১৩ জঙ্গি নিহত হওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় ১৭ বিদেশি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়।
২০১৭ সালের ২৩ জুলাই আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।