বিদেশী পিস্তল ও রক্ষিতাসহ দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্রের সাথে বৈঠক করা বিতর্কিত সেই রকি বড়ুয়া র্যাব ৭ এর হাতে গ্রেফতার হয়। গ্রেফতার রকি বড়ুয়ার সাথে আরও চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী-এমপিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে তার অসংখ্যা ছবি, তাদের সিল, প্যাড এবং সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী, তারেক মনোয়ার ছাড়াও হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ছবি।
রকি বড়ুয়া তো গ্রেফতার হলো, কিন্তু অনেক গুলো প্রশ্ন চলে আসলো সামনে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী কতটা নিরাপদ? রকি বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে যখন ছবি তোলে তখন তার স্বাভাবিক জীবনের কর্মকান্ড সম্পর্কে ধারনা না রেখেই কারা তাকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পর্যন্ত নির্বিঘ্নে যেতে দিলো?
রাজাকার পুত্র মাসুদ সাইদী নিজের বাবার মতই রীতিমত দেশবিরোধী চক্রান্তে মত্ত। সাইদিদের গুপ্তচর তারেক মনোয়ার। রকি বড়ুয়া তাদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কি একবারও আওয়ামী বিরোধী ষড়যন্ত্র নিজেকে সন্নিবেশিত করেনি? মাসুদ সাইদি, তারেক মনোয়ার কি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়নি?
অন্যদিকে শিবির লিটন : ফটোতে টুপি পরা দেখতে ঈমানদারের নাম নূর মোহাম্মদ সিরাজি ওরফে দূর্ধর্ষ শিবীর লিটন, আহা কত বড় ঈমানদার না? দুনিয়াতে তিনি হুর পরিবেষ্টিত হয়ে আছেন।
তিনি একজন দেশ বিরোধী বিপরীত রাজনীতির মানুষ হয়েও গনভবন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, দেশের জনসাধারন জানে জামাত শিবির কখনো আওয়ামি লীগ ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির পরিবারের বন্ধু হতে পারে না।
যেহেতু গনভবন পর্যন্ত শিবির ক্যাডার পৌঁছে গেছে তার অর্থ অনেকটা পরিষ্কার, শেখ হাসিনা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে। কিন্তু প্রশ্নটা এখানে, কার সুপারিশ ও কার মাধ্যমে শিবির ক্যাডার প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গেলো? প্রধানমন্ত্রীর পাশে তারা কারা? যারা এই সুযোগ করে দিচ্ছে?
আওয়ামী রাজনীতির অনেক অনলাইন এক্টিভিস্ট আছে যারা নিরলস অনলাইনে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের ভিতর অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের ইচ্ছা জন্মায়। কিন্তু যখন তারা দেখে প্রধানমন্ত্রীর গনভবনের লোকেরাই রকি বড়ুয়ার মত সন্ত্রাসী কিংবা শিবির লিটনের মত ক্যাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যেতে সাহায্য করছে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি তুলছে তারা, তখন অবশ্যই তাদের মনে নিজের বিরুদ্ধে বৈরিতা ও বিষন্নতা সৃষ্টি হয়।
আবারো প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর পাশে তারা কারা যারা রকি বড়ুয়া আর লিটনের মত ক্যাডারকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত নিয়ে যায়? অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যারা সাক্ষাতে আসেন সকলের সম্পর্কে ধারনা নিয়ে সাক্ষাত করা সম্ভব নয়। এটার তো দায়িত্ব আইন প্রনয়ণকারী সংস্থা, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী ও পাশের সকল আওয়ামী লীগ নেতাদের। তারা কতটা দায়িত্ব পালন করছেন? নাকি প্রধানমন্ত্রীর পাশে হাসি মুখে মোস্তাকরাই আছে, যারা এই সকল মানুষকে গণভবনে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য এবং সাঈদি কে মুক্ত করবার মিটিং সম্পর্কে প্রকৃত ঘটনা জানতে রকি বড়ূয়ার সাথে শামীম সাঈদি, তারেক মনোয়ার ও শিবির লিটনকে এই মূহুর্তে গ্রেফতার করা খুবই জরুরী। কারন এদের গ্রেফতার ছাড়া তাদের মিটিং-প্রধানমন্ত্রীর সন্নিকটে যাওয়ার উদ্দেশ্য কিছুই জানা যাবেনা। বারবারই মনে প্রশ্ন আসে, শিবির ক্যাডার-সন্ত্রাসীরা যেখানে প্রধানমন্ত্রীর এতো সন্নিকটে সেখানে তিনি কতটা নিরাপদ?