মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন নবজাগরণ ব্যক্তিত্ব, সমাজসংস্কারক, ব্রাহ্মধর্ম প্রচারক ও দার্শনিক । তিনি প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পুত্র এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা ৷
১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘তত্ত্ববোধিনী সভা’ ও ব্রাহ্মসমাজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন । পরের বছর তাঁরই অর্থে এবং অক্ষয়কুমার দত্ত’র সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকা । এই পত্রিকায় দেবেন্দ্রনাথকৃত বৃত্তি ও বঙ্গানুবাদসহ উপনিষদ প্রকাশিত হতে থাকে । ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি তত্ত্ববোধিনী সভার সম্পাদক নিযুক্ত হন এবং ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মবিদ্যালয় স্থাপন করেন । ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি বীরভূমের ভুবনডাঙ্গা নামে একটি বিশাল ভূখণ্ড ক্রয় করে আশ্রম স্থাপন করেন । এই আশ্রমই আজকের বিখ্যাত শান্তিনিকেতন ৷
দেবেন্দ্রনাথ কিছুদিন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন । ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে অক্টোবর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন স্থাপিত হলে তিনি তাঁর সম্পাদক নিযুক্ত হন । তিনি দরিদ্র গ্রামবাসীদের চৌকিদারি কর মওকুফের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন এবং ভারতের স্বায়ত্তশাসনের দাবি সংবলিত একটি পত্র ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রেরণ করেন । দেবেন্দ্রনাথ বিধবাবিবাহ প্রচলনে উৎসাহী ছিলেন, তবে বাল্য ও বহু বিবাহের বিরোধী ছিলেন । শিক্ষাবিস্তারেও তাঁর বিশেষ অবদান ছিল । আজ এই মহর্ষির জন্মবার্ষিকীতে জানাই অশেষ শ্রদ্ধা ৷
লেখকঃ- শমিত জামান সাংবাদিক কলামিস্ট।