খন্দকার মোশতাক আওয়ামী সাংসদদের সভা ডাকলেন। ২৯৩ জনের মধ্যে শ খানেক উপস্থিত। বঙ্গভবনের সম্মেলনকক্ষের মঞ্চে বসা খন্দকার মোশতাক, তার দুই পাশে দাঁড়ানো ফারুক আর রশিদ। খন্দকার নিজের বক্তব্যে বললেন- তাকে যেন আওয়ামীগের সাংসদেরা নেতা নির্বাচন করেন।
সবাই চুপ করে রইলেন। যারা তার কথার পিঠে কথা বলতে পারতেন সেইসব শীর্ষস্থানীয় নেতা জেলে। তাদের চারজনকেই পরে জেলে হত্যা করা হয়।
পিন-ড্রপ সাইলেন্স, নিস্তব্ধ পরিবেশে উঠে দাঁড়ালেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক।, যিনি পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান সরকারি কৌসুলী ছিলেন। সিরাজ ভাই মাঝামাঝি একটা সারিতে বসে ছিলেন। উঠে দাঁড়িয়ে প্রথমেই বললেন-
‘খন্দকার, তোমার দুই পাশের ওদের সরে যেতে বলো।’
দুই মেজর এ কথা শুনে থতমত খেয়ে গেল।
পরে মোশতাকের ইঙ্গিতে তারা দরজার বাইরে চলে গেল।
এবার সিরাজুল হকের সরাসরি প্রশ্ন-
‘মুজিবকে কেন খুন করেছ?’
মোশতাকের নির্বাক নিরুত্তাপ উত্তর শোনা গেল-
‘কালের প্রয়োজনে জাতির সংকটময় মুহূর্তে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। প্রয়োজনে যথা সময়ে এ দেশের মানুষ ব্যাপারটা জানতে পারবে।’
সিরাজ ভাই বললেন-
‘সেই প্রয়োজনটা কী ছিল তা জানার জন্য অপেক্ষা করব। যতদিন জানতে পারবো না, ততদিন তুমি মেজর-ক্যাপ্টেনদের রাষ্ট্রপতি হয়ে থাকো। আমরা তোমাকে কোনো স্বীকৃতি দিতে পারবো না।’
মোশতাক মঞ্চ থেকে নেমে চলে গেলো।
সূত্রঃ আমার বেলা যে যায় / এবিএম মূসা।