প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে দেশকে বিশ্বে আরো মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে।
আমরা অন্যের সহায়তা না নিয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরো মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি।
বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার যে স্বপ্ন, যে চেতনায় আমার দেশের লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন।
তাঁদের এবং আমার লাখো মা-বোনের সেই আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা কেন অন্যের কাছে হাত পেতে, মাথা নিচু করে চলব।
কিন্তু ৭৫-এর পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম।
সরকারের পরিচালনায় বাংলাদেশ আজ তাঁর হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত করে উন্নত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্যই আমরা আমাদের সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং যথেষ্ট অর্জনও করেছি।
সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এই অনুষ্ঠান মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরিচালনা করেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে প্রফেসর ডা. এ কে এম এ মুকতাদির অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
এ বছর সরকার দুজন মরণোত্তরসহ আট ব্যক্তি ও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, চিকিৎসাবিদ্যা, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০’-এ ভূষিত করে।
এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দাস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, প্রয়াত কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ (মরণোত্তর), প্রয়াত বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশা (মরণোত্তর) ও আজিজুর রহমান।
চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুকতাদির। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার।
শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস্। আজিজুর রহমান সম্প্রতি কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট সোনার একটি ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, সনদপত্র এবং পাঁচ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রতিবছর ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সরকার এ পুরস্কার প্রদান করে এলেও এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। যা আজ অনুষ্ঠিত হলো।