সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক International Republican Institute (IRI) পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ সরকারের কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় সরকারের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে ১৯ শতাংশ। দেশের উন্নয়নে দুর্নীতিকে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। মাদকদ্রব্যের বিস্তার, বেকারত্ব ও নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে জরিপে।
রেডস্টোন সায়েন্টিফিকের তত্ত্বাবধানে আইআরআই ২০১৯ সালের ১ আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। দেশের আট বিভাগের ৬৪ জেলায় ‘মাল্টি স্টেজ স্টার্টিফায়েড প্রবাবিলিটি’ নমুনায়নের মাধ্যমে ব্যক্তি পর্যায়ে যোগাযোগ করে জরিপ চালানো হয়।
জরিপে বলা হয়, সরকারের প্রতি জনসমর্থন ১৯ শতাংশ বেড়ে ৮৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ৩৬ শতাংশ মানুষ বিরোধী দলের কার্যক্রমকে সমর্থন করছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।
কয়েকটি খাতের চিত্র উল্লেখ করে জরিপে বলা হয়, সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমকে সমর্থন করছে ৯০ শতাংশ মানুষ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কার্যক্রমের উন্নয়নের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ৮৬ শতাংশ এবং যোগাযোগ কাঠামো উন্নয়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ৮১ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া পরিষ্কার পানি সরবরাহে ৭৭ শতাংশ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ৭৬ শতাংশ, স্বাস্থ্য খাতে ৭৪ শতাংশ এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ৭১ শতাংশ মানুষ সরকারি কার্যক্রমকে সমর্থন করেছে। ৭৬ শতাংশ মানুষ মনে করে, সংসদ সদস্যরা এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
দেশের অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরে আইআরআইর জরিপে বলা হয়, ৭৬ শতাংশ মানুষ মনে করে, দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৬২ শতাংশ। দেশ যেসব খাতে সঠিক পথে রয়েছে বলে মনে করে নাগরিকেরা সেগুলোর মধ্যে শিক্ষায় ৭ শতাংশ, জীবনমান উন্নয়নে ১০ শতাংশ, যোগাযোগ কাঠামো উন্নয়নে ১১ শতাংশ, অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১৬ শতাংশ এবং সার্বিক উন্নয়নে ২২ শতাংশ।
দেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও রাজনীতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশের হার বেড়েছে উল্লেখ করে জরিপে বলা হয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সন্তুষ্ট ৫৯ শতাংশ মানুষ। আগে এই হার ছিল ৪৮ শতাংশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৭৬ শতাংশ এবং নিরাপত্তা বিষয়ে ৭২ শতাংশ নাগরিক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ৪৩ শতাংশ নাগরিক মনে করে, চলতি বছর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় আরও উন্নতি হবে। ৫৪ শতাংশ নাগরিক মনে করে, অর্থনৈতিকভাবে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। নিরাপত্তা বিষয়েও উন্নতি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ৪৯ শতাংশ নাগরিক। ৬০ শতাংশ নাগরিক মনে করে, দেশের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। গত বছর ৪৯ শতাংশ নাগরিক ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক উন্নয়নে আশাবাদী ছিল।
জরিপে দুর্নীতিকে দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ১৯ শতাংশ মানুষ মনে করে দুর্নীতির কারণে দেশের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের ব্যবহারকে হুমকি হিসেবে মনে করছে ১৭ শতাংশ নাগরিক। এ ছাড়া বেকারত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ৭ শতাংশ মানুষ। দুর্নীতিকে সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে করলেও গত বছর সরকারি কর্মকর্তাকে ঘুষ, উপহার বা কিছু প্রদান করেছেন কি-না জানতে চাইলে ৭১ শতাংশ মানুষ কোনো ঘুষ বা উপহার দেয়নি বলে জানায়।
এদিকে দুশ্চিন্তার আরেকটি বড় কারণ হিসেবে আয় বৈষম্যকে দেখানো হয়েছে। ৬১ শতাংশ মানুষ মনে করে, ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে।