বেঁচে যাওয়া নাদা হামজা বিস্ফারিত, আতঙ্কগ্রস্ত চোখে এভাবেই বর্ণনা করছিলেন বৈরুত বিস্ফোরণকে। তিনি বৈরুতের বাসিন্দা। অনলাইন আল জাজিরাকে বলেছেন, লেবাননের বৈদ্যুতিক স্থাপনার কয়েক মিটার দূরে ছিলাম আমি। এই স্থাপনাটি বৈরুত বন্দরের সঙ্গেই। বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। দৌড়াতে লাগলাম পাগলের মতো। একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নিলাম।
কিন্তু দেখলাম এই ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। তখন বুকে পানি নেই। বাবা-মাকে ফোন করার চেষ্টা করলাম। কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছিলাম না। বিশ্বাস হচ্ছিল না বেঁচে আছি।
বিস্ফোরণের সময় বৈরুতের বাইরে ছিলেন আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের সহযোগী প্রফেসর নাসের ইয়াসিন। তিনি বলেছেন, বৈরুতের বাইরে থাকলেও মনে হচ্ছিল পাশেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। চারপাশ তখন কেঁপে কেঁপে উঠছিল। এ বিস্ফোরণ ছিল ভয়াবহ। আমার জীবনে এমন বিস্ফোরণ কখনো দেখি নি। আমি লেবাননের গৃহযুদ্ধের মধ্যে বড় হয়েছি, ইসরাইলের আগ্রাসন দেখেছি। কিন্তু এত বড় বিস্ফোরণ আমার জীবনে কখনো ঘটেনি। এখনও আমরা জানি না, কি ঘটেছে।
ঘটনার পর পরই আহতদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে ছুটে গেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ খলিফা। বিস্ফোরণের সময় তিনি নিজের বাড়িতেই ছিলেন। মোহাম্মদ খলিফা বলেছেন, বিস্ফোরণের সময় আমি চিৎকার করছিলাম। পরিবারের সবাইকে সচেতন হতে বলছিলাম। বলছিলাম ভূমিকম্প হচ্ছে। অবিলম্বে সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। এমন অবস্থা থেকে সামান্যর জন্য আমি বেরিয়ে আসতে পেরেছি। বাসায় পরিবারের সদস্যদের ফেলে রেখে দৌড়ে ছুটেছি হাসপাতালে, যদি একটি প্রাণ রক্ষা করতে পারি। লেবানন এমনিতেই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অত্যন্ত খারাপ একটি পরিস্থিতিতে। এখন এই অবস্থায় মেডিকেল সরঞ্জাম সহ সবকিছুতেই সঙ্কট রয়েছে। যা আছে তা নিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বর্ণনা করার মতো নয়।
বিস্ফোরণের স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিলেন সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল খালেদ হামাদ। তিনি বলেছেন, এ এক বিপর্যয়। রাস্তার সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে ভাঙ্গা কাচ। রাস্তার ওপর আপনি দেখতে পাবেন বহু আহত মানুষ। সব কিছুই আমাকে বৈরুতে গৃহযুদ্ধের শেষ দিনটির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
এ ঘটনাকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন সাংবাদিক হাবিব বাত্তাহ। বিস্ফোরণের স্থান থেকে বহুদূর পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে সব কিছু। তাই তিনি একে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আমার বসতি থেকে ১০-১৫ মিনিটের দূরত্বে বসবাস করেন এমন বন্ধুরা দেখিয়েছেন তাদের বাড়িঘর। সব কিছু উড়ে গেছে। কিচ্ছু নেই। জানালাবিহীন ভবনে কিভাবে গত রাত মানুষ পার করেছে তা ভেবে বিস্মিত হই। তিনি আরো বলেন, বিপর্যয়ের জন্য মোটেও প্রস্তুত নয় লেবানন। আমরা সব সময় বসবাস করি এক বড় ধ্বংসলীলার আতঙ্ক বুকে নিয়ে। যদি এই দেশে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ভূমিকম্প হয় তাহলে তা মোকাবিলার জন্য জরুরি প্রস্তুতি নেই। মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পুলিশ নেই, যা এক চরম বিপজ্জনক ব্যাপার। এমন কোনো স্থান পাবেন না যেখানে আইনকানুন ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে সরকার। মহাসড়কে কোনো টহল নেই। ভবনে অগ্নিকান্ড বিষয়ক পরিদর্শন নেই।
রক্তে সারা শরীর সয়লাব একজন ব্যক্তির। বৈরুতে কি হয়েছে, তার কি ঘটেছে তার কিছুই তিনি বুঝতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, আমি মাছ ধরছিলাম। শুনলাম পাশেই আগুন লেগেছে। তাই বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম। এরপর শুনি বিস্ফোরণের শব্দ। তখনই আমার এই অবস্থা। আমি আহত। এটুকুই জানি।
রক্তে ভিজে আছে আরেকজন ব্যক্তির মুখ। তিনি বলেন, আমার গাড়ি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু তা বিস্ফোরণে গড়িয়ে যেতে থাকে। এতে জানালার কাচ ভেঙে আমার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment