জাতীয় হকি দলের হয়ে খেলছেন নৌবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য । কিন্ত করোনা ভাইরাসে স্থবির পুরো ক্রীড়াঙ্গন । দেশকে কিছু দেয়ার জন্য তারা এবার খেলার মাঠ ছেড়ে জনগণের মাঠে নামতে ইচ্ছুক । ছবির ভদ্রলোক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চীফ পেটি অফিসার মামুনুর রহমান চয়ন । তিনি জাতীয় হকি দলের সাবেক অধিনায়ক । একইসাথে তিনি পেনাল্টি কর্ণার স্পেশালিষ্ট হিসেবে সুপরিচিত । করোনা ক্রান্তিতে এগিয়ে আসতে মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় হকি দলের সাবেক এই অধিনায়ক । বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে চাকরি করছেন জাতীয় হকি দলের রাসেল মাহমুদ জিমি, মামুনুর রহমান চয়ন, ফরহাদ আহমেদ শিতুল, সারওয়ার হোসেইন, আশরাফুল ইসলাম, মইনুল ইলাম কৌশক, ফজলে হোসেইন রাব্বিরা ।
এরা সবাই সবশেষ ২০১৮ সালে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন । আর নৌবাহিনীর হয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে শহীদ স্মৃতি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় । মাঠে খেলেই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করতে চান না জাতীয় দলের এসব তারকারা । তারা চাইছেন দেশের এই দুর্যোগে অন্যান্য প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মতো জনগণের পাশে দাঁড়াতে ।
তবে সাধারণ নৌসেনাদের মতো খেলোয়াড়দের দায়িত্ব এক নয় । তাদের মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যেন দেশের যেকোনো জরুরি মুহূর্তে অংশ নিতে পারে । এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান চয়ন বলেন, ‘আমরা সবাই শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি । চাকরিজীবী হিসেবে আমাদের প্রথম পরিচয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর । তারপর আমরা হকির খেলোয়াড় । নৌবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে আমার প্রথম কাজ হলো দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা । সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে আমাদের কোনো ছুটি নেই । বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জেলা পর্যায়ে সেবা দিচ্ছে আর আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সমুদ্রে যেখানে সেনাবাহিনী যেতে পারে না । যেহেতু আমরা ঢাকায় আছি, আমাদের দায়িত্ব হলো প্রশাসনিক কাজ করে যাওয়া ।’
চয়ন নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবেন, যদি এমন সময়ে দেশের স্বার্থে মাঠে কাজ করার নির্দেশনা আসে । তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় গেলে আমরা মন থেকেই যেকোনো নির্দেশনা নিয়েই দেশের স্বার্থে নেমে যেতে প্রস্তুত আছি । জাতীয় দলে যেমন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতাম তেমন নৌবাহিনীর হয়ে মাঠ পর্যায়ে জনগণের সেবা করতে পারলে নিজেকে আরো সৌভাগ্যবান ভাবতাম, আমরা প্রস্তুত । উপর থেকে নির্দেশনা আসলেই আমরা মাঠে নেমে যাবো ।’