কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার মাইচ চর ইউনিয়নে আজিজুর রহমান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এ মামলায় ৩৩ জনকে খালাস দেয় সিআইডি ও মামলা তদন্তের পর সিআইডি অপরাধী নয়জনকে আসামী করে। কিশোরগঞ্জে ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আজিজুর রহমানকে হত্যা করে হাত পা বেধে রাস্তার ধারে ফেলে রাখে একদল সন্ত্রাসী। তখন উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহিনীর অভিযোগ ছিলো স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিলে আজিজুর রহমানকে হত্যা করে। যার ফলে ৩৩ জনকে আসামী করে মামলা করে নিহত আজিজুর রহমান এর ভাই।
কিন্তু উক্ত মামলায় এলাকা বাসীর বরাবরের মত অভিযোগ ছিলো যে অপর পক্ষকে ফাঁসাতে চেয়ারম্যান বাহিনী তাদের নিজেদের একজনকে হত্যা করে ও সেই দায় অপরপক্ষের উপর চাপায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়দের আন্দোলন ও আসামীদের জবানবন্দির কারনে মামলা সিআইডিতে হস্তাস্তর করা হয়। দীর্ঘ ১ বছরের যাচাই বাচাই শেষে সিআইডি সত্য উদঘাটনে সমর্থ হয়। তারই অংশ হিসেবে সিআইডি সেই মামলায় ৩৩ জন আসামীকে মুক্তি দেয় ও সত্যিকারের জড়িত ৯ জনের নামে মামলা দায়ের করে৷
মৃত আজিজুর রহমানের স্ত্রীর করা মামলার কপি থেকে জানা যায় উক্ত দিন ওয়াহেদ মিয়া রাত ১০ টায় আজিজুরকে ডেকে আনে উদ্দেশ্যহীন কাজ আছে বলে।
ওয়াহেদ মিয়া উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহিনীর একজন সক্রিয় লোক। তারপর চেয়ারম্যান বাহিনীর সদস্যরা আজিজুরকে হত্যা করে ও হাতে পায়ে বেধে শরীর ক্ষত বিক্ষত করে রাস্তায় ফেলে দেয়। এই হত্যার একদিন আগে বিদেশ গমন করে মামলার ২য় আসামী জয়নাল আবেদিন। চেয়ারম্যান বাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে জয়নাল আবেদিন ও তার বাবা এবং পরিবার আত্মীয় স্বজনকে মামলায় আসামী করে। আর সেই সুযোগে আসামীদের বাড়িঘর লুট, অগ্নিসংযোগ, আসামীদের বাজারের উপর থাকা দোকানপাট লুট করে তাদের সর্বশান্ত করে দেয়।
উল্লেখ্য আজিজুর রহমান উক্ত চেয়ারম্যান বাহিনীর চেয়ারম্যান এর ভাতিজা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অপর পক্ষকে ফাসাতে এই পরিকল্পনা করে চেয়ারম্যান বাহিনীর সদস্যরা। সিআইডির রিপোর্ট এর পর ৩৩ জন খালাস পেলে তারা অনেকেই জানায় এই হত্যার পিছনে সরাসরি নির্দেশনা ছিলো চেয়ারম্যান এর। সবাই সেটা জানে এবং তারপরও নতুন লিস্টে চেয়ারম্যান এর নাম নেই, শুধু মাত্র হত্যায় অংশ নেয়া বাকিদের নাম আছে। খালাস পাওয়া আসামীরা জানায়, তাদের যে ধনসম্পদ লুন্ঠন করেছে চেয়ারম্যান বাহিনী সেগুলো তাদের সারা জীবনের অর্জন ছিলো। আজ সব হারিয়ে তারা নিঃস্ব। তাদের একটাই দাবি উক্ত হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী চেয়ারম্যান বাহিনীর প্রধান চেয়ারম্যানকে দ্রুত গ্রেফতার করে উতকৃষ্ট শাস্তি প্রদান করা হোক।