জীবন বিনাশী বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৯১ জনে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৬৩ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৫৪০ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫০ হাজার ৭৫৮ জন (৪ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫ জন (৭৯ শতাংশ) সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং এক লাখ ১৯ হাজার ৯৬১ (২১ শতাংশ) রোগী মারা গেছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরের চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বলা হচ্ছে গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোমের (এসএআরএস) রোগী ও ইবোলা রোগীর মৃত্যুহারের তুলনায় করোনায় মৃত্যুহার অনেক কম। এসএআরএসের রোগীর মৃত্যুর হার প্রায় ১১ শতাংশ আর ইবোলা ৯০ শতাংশ।
যদিও মৃত্যুর হার গণনা একেক জনের কাছে একেক রকম। যেমন, স্পেনীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুসারে, ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী করোনার রোগীদের মধ্যে মারা যাওয়ার হার ৫ শতাংশ, ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী লোকদের মধ্যে ২.১৬ শতাংশ এবং ৪০ দশকে যারা রয়েছেন তাদের মৃত্যুঝুঁকি মাত্র ০.৩ শতাংশ।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আর্টুরো কাসাদেভালের মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে অ্যান্টিবডিগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো ঝুঁকিতে থাকা লোকদের সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা যায়।
অস্ট্রেলিয়ান গবেষক অধ্যাপক ক্যাথরিন কিডজারকা করোনাভাইরাসের জন্য দুটি ওষুধ পরীক্ষা করছেন। তারা নির্ণয় করতে পেরেছে, কিভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। গবেষণাটি নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬৪০ জনের। মোট আক্রান্ত ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৪১ জন। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৮৩০ জন।
মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২০ হাজার ৪৬৫। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫১৬। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬১৯ জনের।
স্পেনে প্রাণহানি হয়েছে ১৭ হাজার ৭৫৬। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯ জন। ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৬৭। মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৯।
যুক্তরাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৩২৯ জনের। আক্রান্ত ৮৮ হাজার ৬২১ জন।
বাংলাদেশে সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে। অপরদিকে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮২ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৩ জনে। এটি এখন পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ রেকর্ড। ক্রমান্বয়ে দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।