বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করা সত্ত্বেও আমাদের দেশে এখনও অনেককে সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই চলাচল করতে দেখা যায়। হাট-বাজারে সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়েও অনেকে উদাসীন।
এছাড়া কোরবানির চাহিদা মেটাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে পশু বিক্রির হাট। এবার দুটি ধাপেই নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মানুষকে সচেতন করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়ার পরও সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া চলাচল এবং সামাজিক দূরত্ব না মানার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ প্রেক্ষাপটে এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঈদ উদযাপনে মানুষের মধ্যে দল বেঁধে গ্রামে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
ঈদুল ফিতরের সময় অনেকে যেভাবে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, এবারও সেভাবে মানুষ রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়ি যাতায়াত করলে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করলে দেশে করোনার সংক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
ঈদুল আজহা সামনে রেখে সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটে পশু কেনাবেচা করতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ বা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা হবে কিনা, তা এক বড় প্রশ্ন। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে উদাসীন হলে দেশে করোনার সংক্রমণ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে, এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটেও চলবে কোরবানির পশু বেচাকেনা।
এ পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তার পাশে, অলিগলিতে যাতে পশুর হাট বসানো না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে প্রবেশ করে এটাও নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া হাটে যারা পশু কেনাবেচাসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকবেন, তারা সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
করোনা মহামারীর এ সংকটকালে অনলাইনে কিংবা সরাসরি গৃহস্থের কাছ থেকে পশু ক্রয় করে কোরবানি দেয়ার বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। অন্যদিকে মানুষ যাতে অবাধে রাজধানীর বাইরে যাতায়াত করতে না পারে তাও নিশ্চিত করা দরকার।
এবার যার যার অবস্থানে থেকে ঈদ পালন করাই হবে শুভবুদ্ধির পরিচায়ক। করোনা সংক্রমণ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ার বিপদ কী তাও মানুষকে জানাতে হবে। মোট কথা, করোনার সংক্রমণ যাতে আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।