চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। , ব্রিটেনে গিয়ে বসবাস করা এবং ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে হংকংয়ের বাসিন্দাদের।
সাড়ে তিন লাখ ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী এবং আরও ২৬ লাখ যোগ্য আবেদনকারীকে আগামী ৫ বছর ব্রিটেনে গিয়ে বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে। তার এক বছর পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রিটেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
স্থানীয় সময় বুধবার হাউস অব কমন্সে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, চীনের নতুন নিরাপত্তা আইনের কারণে হংকংবাসীর স্বায়ত্তশাসন লঙ্ঘন হচ্ছে এবং ভুক্তভোগীরা চাইলে আগের এই ব্রিটিশ উপনিবেশ ছেড়ে ব্রিটেনে চলে আসতে পারেন।
চীনের পাস করা নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। এই অবস্থায় হংকং নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।ফলে স্বাভাবিকভাবেই হংকং ইস্যুতে বেশ চাপে পড়ল চীন।
মঙ্গলবার চীনের পার্লামেন্টে হংকং নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই আইনের কারণে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের ওপর চীনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ওই নগরীর স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
১৯৮৭ সালে হংকংয়ের ব্রিটিশ পার্সপোর্টধারীদের বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, কিন্তু ওই অধিকারে বিধিনিষেধ আরোপের ফলে বর্তমানে তারা ভিসা ছাড়া যুক্তরাজ্যে গিয়ে ৬ মাসের বেশি অবস্থান করতে পারতেন না।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী হংকংয়ে যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার বাসিন্দাসহ আরও ২৬ লাখ ‘উপযুক্ত’ বাসিন্দা যুক্তরাজ্যে গিয়ে ৫ বছর বাস করতে পারবেন, এর ১ বছর পর তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
হংকংয়ে থাকা বিদেশি ব্রিটিশ নাগরিকরা ও তাদের ওপর নির্ভরশীলরা যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার পাবে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব স্যার সিমন ম্যাকডোনাল্ড চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়োমিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে হংকংয়ের নিরাপত্তা আইন নিয়ে ব্রিটিশ সরকার ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছেন।
হংকং কর্তৃপক্ষ যে নতুন নিরাপত্তা আইন পাস করেছে তা ১৯৮৫ সালের সিনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণার ‘পরিষ্কার ও গুরুতর লংঘন’ বলে অভিযোগ করেছেন জনসন।
১৯৯৭ সালে হংকংয়ের সার্বভৌমত্ব চীনের অধিকারে যাওয়ার পরবর্তী ৫০ বছর পর্যন্ত হংকংয়ের সুনির্দিষ্ট ধরনের স্বাধীনতা কীভাবে সুরক্ষিত থাকবে তার চুক্তি এই ঘোষণা। এই চুক্তি মেনে চলার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে।