লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারতের। সম্প্রতি দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন সেনা সদস্য নিহত হয়। এতে আরও চরমে পৌঁছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে সীমান্তে দুই দেশই মোতায়েন করেছে হাজার হাজার সেনা সদস্য ও অত্যাধুনিক সাজোয়া যান, যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে।
লেহ সামরিক ঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রীর অবতরণের খবর সকাল ১০টা নাগাদ এসেছে। কিন্তু তিনি যে এ দিন লাদাখ যেতে পারেন, এমন কোনও খবর আগে থেকে ছিল না।
আর এই উত্তেজনার মাঝেই হঠাৎ লাদাখে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাতের আবহে তাৎপর্যপূর্ণ তৎপরতা। লাদাখ পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এলএসিতে ভারতীয় বাহিনীর যে সব সীমান্ত চৌকি রয়েছে, সেগুলোর কয়েকটিতে মোদি গিয়েছেন এবং সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
তিন বাহিনীর প্রধান সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং স্থলবাহিনীর প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণেকে সঙ্গে নিয়ে লাদাখ গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির এই আচমকা সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেজ্ঞরা।
লেহ থেকে তিনি এলএসি’র দিকে গিয়েছেন বলেও প্রাথমিকভাবে খবর আসছে।
কারও পক্ষ থেকেই আগে জানানো হয়নি যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে আজ লাদাখ যেতে পারেন।
বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের লাদাখ সফরের কথা ছিল। সে সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়। কেন বাতিল হল, স্পষ্ট জানায়নি দিল্লি। কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন, চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে বলেই রাজনাথের সফর স্থগিত করা হল।
১৫ জুন রাতে গালওয়ানের সংঘর্ষে যে জওয়ানরা জখম হয়েছিলেন, তাদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই লেহতে দেখা করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে মোদি আগে লেহতে গিয়েছেন, নাকি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত ফরওয়ার্ড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড নিমুতে তার বিমান আগে অবতরণ করেছে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।
কিন্তু শুক্রবার সকালে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, আরও অনেক বড় বার্তা চীনকে দেওয়ার ছিল বলেই বৃহস্পতিবার রাজনাথের সফর স্থগিত করা হয়েছিল।
এলএসিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরে স্থলসেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে এবং বায়ুসেনা প্রধান আর কে এস ভদৌরিয়া আগেই লাদাখ ঘুরে এসেছিলেন। সামরিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে এসেছিলেন তারা। যেকোনও আগ্রাসনের জবাব দিতে ভারত তৈরি বলেও বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। তার মাঝেই আচমকা প্রধানমন্ত্রী মোদি লাদাখ পৌঁছানোয় ভারতের কৌশলগত বার্তাই বদলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।