নেপালের প্রধানমন্ত্রী খাদগা প্রসাদ ওলি নিজ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মধ্যেই কয়েক সপ্তাহের ভেতর পদচ্যুত হতে পারেন। ভারত নিয়ে কড়া অবস্থান এবং চীনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে নিজের দলের নেতাদের কাছেই অপছন্দের পাত্র হয়েছেন ওলি।
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্পা কামাল দাহালের সঙ্গে গত বুধবার বৈঠক করেছেন ওলি। দাহাল বলেছেন, সামনের দিন এবং সপ্তাহগুলোতে দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে খাদগা প্রসাদ ওলির পদ থাকা-না থাকার ব্যাপারে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও নেপালের বিতর্কিত এলাকা নিজেদের হিসেবে চিহ্নিত করে নতুন মানচিত্র প্রকাশের পর থেকে ঝামেলায় পড়েছেন ওলি।
তার নিজের দলের কয়েকজনের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারত চেষ্টা চালিয়েছে। তার এ মন্তব্যের জেরে নয়াদিল্লির সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের কেবল অবনতিই ঘটেছে।
সপ্তাহেই চীনের রাষ্ট্রদূত নেপালে যান কেবল সে দেশের কম্যুনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য। এদিকে নেপালে প্রভাব বিস্তারের জন্য ভারত-চীন দু’দেশই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
অথচ নেপালে চীনের সম্পৃক্ততা বেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাঠমান্ডুতে ভারতের ব্যাপক প্রভাব ছিল। নেপালে বিমানবন্দর তৈরি, রাস্তার কাজ ও বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সে দেশের নেতাদের সঙ্গে চীনের কূটনীতিকরা তৎপরতা বাড়িয়েছেন।
পুরনো সিল্ক রোড রুট যেভাবে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনকে যুক্ত করেছিল, সেভাবে নেপালকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে চীন।
নেপালের জনপ্রিয় দৈনিক নাগারিক-এর সম্পাদক গুরানাজ লুইটেল বলেন, নেপাল কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানে রয়ে গেছে। উভয় দেশই মনে করে যে, নেপালের রাজনীতিতে তাদের গুরুত্ব থাকতে হবে। বর্তমান সরকার চীনের প্রতি বেশি ঝোঁক দেখাচ্ছে। আর সে কারণে ক্রমশ ভারতের প্রভাব কমে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে ২০১৭ সালে নেপালে কম্যুনিস্ট সরকার ক্ষমতায় এলে শঙ্কায় পড়ে যায় ভারত।
নেপালের কম্যুনিস্ট পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য বিরোদ খাতিওয়াদা বলেছেন, নেপালে কম্যুনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় দেখে ভারত সরকার ভেবেছে, নেপাল চীনের পরামর্শে চলছে। কিন্তু সেটা সঠিক নয়।
২০১৭ সালে পার্লামেন্টে কম্যুনিস্ট পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন ওলি। ওই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন, ওলি এবং দাহাল পাঁচ বছর শাসনামল ভাগ করে নেবেন। কিন্তু ওলি আড়াই বছর পার করলেও সেই লক্ষণ দেখা যায়নি।