গাছেরও যে প্রাণ আছে এবং সে আপনার আদরে, কথায় সাড়া দেয় এ তো বহুদিন আগেই প্রমাণ হয়ে গেছে। গাছ নীরব থেকেও আপনার মনের দুঃখকে নিমেষে দূর করে দিতে পারে। ঠিক যেমনটা এখন করছে, এই করোনা সংকটের সময়ে।
সারা বিশ্বের মানুষ অদেখা করোনা শত্রুর মোকাবিলা করে যাচ্ছেন।
ভারতে মার্চ মাসে আত্মপ্রকাশ করলেও, বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকেই নিজের উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছিল। আর প্রায় তখন থেকেই দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হচ্ছে প্রিয় বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে। আনন্দ অথবা দুঃখের মুহূর্তে আপনজনকে জড়িয়ে ধরাও আজ অতীত।
আর এই মোকাবিলার প্রধান অস্ত্রই হলো মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।
করোনার দুঃসময়ে গাছকে আলিঙ্গন করার বার্তাই প্রচার করছে ইসরায়েলের নেচার অ্যান্ড পার্কস অথরিটি। মানুষের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় যে মন খারাপ তৈরি হচ্ছে, তার সমাধানেই এই উপায় বের করেছে ইসরায়েল প্রশাসন।
আর এই একা থাকতে থাকতেই মানুষের মনে বাসা বাধতে শুরু করেছে অবসাদ, মন খারাপ। এই সমস্যা থেকেও বাঁচাতে পারে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন।
এতে মানুষের সঙ্গে সামাজিক দূরত্বও বজায় থাকবে, আবার নিজেকে একাও মনে হবে না। সুখে-দুঃখে প্রিয় বন্ধুর মতোই ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবেন কোনও গাছকে।
অ্যাপোলোনিয়া ন্যাশনাল পার্কে দাঁড়িয়ে নেচার অ্যান্ড পার্কস অথরিটির মার্কেটিং ডিরেক্টর ওরিট স্টেইনফিল্ড জানিয়েছেন, ‘অপ্রিয় করোনাভাইরাসের সময়ে আমরা বিশ্বের সব মানুষের কাছে অনুরোধ করব প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে থাকতে। প্রাণ ভরে শ্বাস নিন, প্রয়োজনে গাছকে জড়িয়ে ধরুন… এভাবেই নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করুন।
নেচার অ্যান্ড পার্কস অথরিটির উদ্যোগে আয়োজিত একটি ট্যুরে অংশ নিয়েছিলেন বারবারা গ্রান্টের মতো প্রকৃতি প্রেমীরা। পার্কের গাছকে আলিঙ্গন করেই তারা এই উদ্যোগের সূচনা করলেন। করোনা সংক্রমণের ভয়ে দীর্ঘ সময়ে নিজের আদরের নাতি-নাতনিকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে পারেননি বারবারা। তাই গাছকেই আলিঙ্গন করে নিজের মনের কষ্ট কিছুটা হালকা করলেন।
মে মাসে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ফের বাড়ছে ইসরায়েলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের সব নাগরিকদের জন্যে বাড়ির বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে।