লকডাউন শীথিল করার পর যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুতে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ব্রাজিল।
করোনা ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৫৮ জন মারা গেছেন। যেভাবে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়বে। নতুন করে রোগী বাড়তে থাকায় বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতাল থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড ৭৭ হাজার ২১৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ফ্লোরিডা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও টেক্সাসে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বাড়ছে। গত এক দিনে মারা গেছেন ৯৬৯ জন, যা গত ১০ জুনের পর সর্বোচ্চ।
বর্তমানে টেক্সাস ও অ্যারিজোনা অঙ্গারাজ্যে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। সেখানে মর্গগুলোতে মৃতদেহ রাখার আর জায়গা নেই।
গত এপ্রিলে দেশটি সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে। ওই সময় প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
মে মাসে মৃত্যু কিছুটা কমে এক হাজারের কাছাকাছি এবং জুন মাসে তা এক হাজারের নিচে নেমে এসেছিল। কিন্তু জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি এই দ্বিধা দূরে ঠেলে রোগ নিয়ন্ত্রণে একজোট হয়ে কাজ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠিক-ভুলের বিচার করা কঠিন।
ভাইরাস প্রতিরোধে দূরত্ব বজায়ে কড়াকড়ি আরোপ, বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, স্কুল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে দেশটির জনগণ এখনও দ্বিধাবিভক্ত।
বরং যেটা হয়েছে তা মেনে নিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে। আসুন এসব অর্থহীন কথা বন্ধ করি এবং কীভাবে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার ব্যবস্থা করি।”
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই আছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল।
সেখানে গত মার্চে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মারা গেছেন ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস ব্রাজিলে পৌঁছাতে কিছুটা সময় নিয়েছিল। প্রথম দেশটির অ্যামাজন অঞ্চলে এ রোগ ধরা পড়ে। সেখানে বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক। যে কোনো মুহূর্তে মৃতদেহ কবর দেওয়ার কফিনে টান পড়বে বলে সতর্ক করেছেন কর্মকর্তারা।
অঞ্চলটির আদিবাসীরা বিশেষ করে মানাউসে অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। কারণ, হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেবা তাদের হাতের নাগালের বাইরে।
রিও ডি জেনিরো বা সাও পাওলোর মত বড় শহরেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। খোদ প্রেসিডেন্টও এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো শুরুতে করোনাভাইরাসকে একেবারেই পাত্তা দেননি, নেননি কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসকে সাধারণ সর্দি-জ্বরের সঙ্গে তুলনা করা বোলসোনারোর নমুনা পরীক্ষায় গত ৭ জুলাই সংক্রমণ ধরা পড়ে।