বর্তমান সময়ে অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, এখন আর মানুষের মাঝে মানবিকতা নেই। কিন্তু এখনও এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা দেখে আবারও মানুষ ও মানবিকতার ওপর আমাদের বিশ্বাস ফিরে আসে। এই ঘটনাও সেরকমই। গ্রামের কমিউনিটি সুইচবোর্ডের ভেতরে বাসা বেঁধেছিল একটি পাখি। সেই বাসায় আবার ডিম পেড়েছিল পাখিটি। একজন গ্রামবাসী সবার প্রথমে সেটি দেখতে পান। তিনি ছবি তুলে সেটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাঠান। তারপরই পাখির বাসাটিকে বাঁচাতে টানা ৩৫ দিন গ্রামবাসী অন্ধকারে থাকলেন।
তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার একটি গ্রামের। গ্রামবাসী সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পাখির ডিম থেকে ছানা ফুটে বের না হওয়া পর্যন্ত ওই গ্রামে আলো জ্বালানো হবে না। বুলবুলি পাখিটির বাসা ও ডিম বাঁচাতে জন্য টানা ৩৫ গ্রামবাসী রাস্তার আলো জ্বালাননি। এই ভরা বর্ষায় সারা গ্রামের লোকজন অন্ধকার রাস্তা দিয়েই চলাচল করেছেন।
কারুপ্পুরাজা নামে এক কলেজছাত্র জানান, গ্রামে মোট ৩৫টি সড়ক বাতি রয়েছে। কিন্তু তারা গত ৩৫দিন একটি বাতিও জ্বালাননি। কারণ সব বাতির সুইচ ওই কমিউনিটি সুইচবোর্ডে। মোবাইলের টর্চ, টর্চ লাইট ব্যবহার করেই গ্রামবাসীরা এই কদিন রাস্তায় যাতায়াত করেছেন।
গ্রামে মোট ১০০ পরিবার রয়েছে। সবাইকে বিষয়টি বোঝানো কঠিন হয়েছিল। কারণ সবার মানবিকতা বোধ সমান নয়। কেউ কেউ সামান্য পাখির বাসার জন্য এতদিন অন্ধকারে চলাচল করতে প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু গ্রামের যুবক-যুবতীরা তাদের অনুরোধ করেন। মূর্তি ও কার্তি নামের দুই ভাইয়ের ওপর ছিল পাখিদের আচরণে লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব। তারা প্রতিদিন মা পাখি উড়ে গেলে একবার করে দেখে আসতেন ডিমগুলি কী অবস্থায় রয়েছে! এর পর একদিন ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। তার পর সেই বাচ্চাগুলো বড় হতে থাকে। গ্রামবাসীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। গ্রামবাসীদের কেউ কেউ পাখির বাসা পরিষ্কারও করে দিতেন।