ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের নারীরা অনাবাসী কাশ্মীরিদের বিয়ে করলেও এখন আর তাঁদের সম্পত্তি অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।
আর্টিকল ৩৩-এ, যেটি ৩৭০ অনুচ্ছেদ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে জম্মু ও কাশ্মীরের নারীরা বাইরের কোনো লোককে বিয়ে করলে তাঁদের সম্পত্তির মালিকানা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আর্টিকল ৩৩-এ জম্মু-কাশ্মীরের নারীদের উপত্যকার বাইরের ছেলেদের বিয়ে করালে তাঁদের কাশ্মীরের ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা দিয়েছে সরকারকে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ফলে এখন কাশ্মীরের বাইরের লোকেরাও উপত্যকায় স্থায়ী বাসিন্দা ও জমি কিনতে পারবেন। এ ছাড়া সরকারি চাকরি ও সেখানে বসবাসও করতে পারবেন বহিরাগতরা।
কোনো রাজ্যের বাসিন্দাদের আবাসস্থল বাছাইয়ের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু এত দিন কাশ্মীরের জন্য ৩৭০ ধারা বজায় থাকায় নিরপেক্ষতা ও নারী-পুরুষের সমতা সম্ভব ছিল না। অনুচ্ছেদ ৩৩-এ এবং ৩৭০ ভারতীয় সংবিধানের নীতি ও ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্যতা এবং ভ্রাতৃত্বের নীতির বিরোধী ছিল।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলকরণ বিল উপস্থাপন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি সংসদে বলেছিলেন, ‘রাজ্যের কন্যারা রাজ্যের বাইরে বিয়ে করলে তাঁদের সম্পত্তির অধিকার হারাতে হয়। এটি নারী এবং তাঁদের বাচ্চাদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক। এসসি এবং এসটি [তফসিলি জাতি ও উপজাতি] জনগণের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংরক্ষণ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটি জানার পরও কিছু লোক শুধু তাঁদের রাজনৈতিক লাভের জন্য এই নিবন্ধটি স্থায়ী করে চলেছে।
৩৭০ অনুচ্ছেদের পক্ষে, তারা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের বিরোধিতা করে। ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে এত দিন শুধু জম্মু ও কাশ্মীরে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন প্রয়োগ করা যায়নি। একইভাবে অন্যান্য অধিকারের মতো শিক্ষার অধিকার, ভূমি অধিগ্রহণ আইন, একাধিক অক্ষমতা আইন, সিনিয়র সিটিজেন আইন, প্রান্তিকীকরণ আইন এবং হুইসেল ব্লোয়ার প্রোটেকশন আইন উপত্যকার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়নি।
গত বছরের ৮ আগস্ট জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নারীদের প্রতি বৈষম্যকে জোর দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের মেয়েরা আমাদের বাকি রাজ্যের মেয়েরা যেসব অধিকার ভোগ করে তা থেকে বঞ্চিত ছিল।
৩৭০ বাতিল করার ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের নারীরা এখন জমি কেনা এবং উপত্যকার কোনো অনাবাসীকে বিয়ে করলেও শিশুদের কাছে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন। এতে জম্মু-কাশ্মীরের নারীরা নতুন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন।