ইমরান খান ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের আগ্রাসন অব্যাহত থাকায় এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
সৌদি হামলা অব্যাহত থাকার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এর ফলে সেখানে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সৌদি আগ্রাসনের কারণে ইয়েমেনের সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ পাক প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, এ যুদ্ধ থামানোর জন্য ইসলামাবাদ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরব আমিরাতসহ আরো কয়েকটি দেশের সহযোগিতায় সৌদিআরব ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে স্থল, সমুদ্র ও আকাশ পথে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওই দেশটিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সৌদি বর্বর আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ইয়েমেনি নিহত, হাজার হাজার মানুষ আহত এবং লাখ লাখ মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। আগ্রাসন শুরুর পাঁচ বছর পর এখনো হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এ সমালোচনা থেকে থেকে ইয়েমেন যুদ্ধের ব্যাপারে ইসলামাবাদের নীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে পাকিস্তানকে রাজি করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর সৌদি সরকার ইসলামাবাদকে বিপুল অংকের অর্থ সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এ সমালোচনা থেকে বোঝা যায় লোভ দেখানোর কৌশল এঁটেও সৌদি আরব ব্যর্থ হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবে রিয়াদের অন্যায় দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। বিশেষ করে ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের তীব্র বিরোধী পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো ও জনগণ এ ব্যাপারে আগেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল।
ধর্ম বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী সাহেব যাদেহ হামেদ সাঈদ কাজেমি বলেছেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট কেবল যুক্তরাষ্ট্রকে সেবাদান করছে এবং মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করাই ওই জোট প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য।
পাকিস্তান যদি সরাসরি এ জোটে যোগ দেয় তার অর্থ হবে আগ্রাসী সৌদি আরব ও আমেরিকাকে সহযোগিতা করা। তবে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ। এ কারণে পাকিস্তানের জনগণ, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমগুলো অনেক দিন ধরেই রাহিল শরীফের সমালোচনা কর আসছিল।
২০১৬ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাশ হয় যার ভিত্তিতে ইয়েমেন ইস্যুতে নিরপেক্ষ থাকার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে রাহিল শরিফের উপস্থিতি ওই প্রস্তাবের লঙ্ঘন। কিন্তু তারপরও সৌদি অর্থ সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার কথা জানান।
পাকিস্তানে তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে। তবে ইমরান খান ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইয়েমেনিদের বিরুদ্ধে সৌদি আগ্রাসনের সমালোচনা করে আসছেন।