বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশটির পরিবেশমন্ত্রী দামিয়ানোস কাত্তার পদত্যাগ করেছেন। একই ঘটনায় এর আগে দেশটির তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদও পদত্যাগ করেন।
সরকারের ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ। টেলিভিশনে দেয়া এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, বৈরুতে বিশাল বিপর্যয়ের পর আমি সরকার থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি লেবাননিজদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি।
স্থানীয়দের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ইতোমধ্যে লেবানন সরকারের দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
ঘটনায় অনেক সংসদ সদস্যও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এতে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার বেকায়দায় পড়েছেন।
পরিবেশমন্ত্রী দামিয়ানোস কাত্তার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই মহাবিপর্যয়ের মধ্যে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের ওপর আস্থা না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫৮ জন, আহত ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ। বিস্ফোরণে শহরটির অর্ধেকই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এতে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন তিন লাখের বেশি বাসিন্দা।
লেবাননের সরকারি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, বৈরুত বন্দরের একটি গুদামে প্রায় সাত বছর ধরে মজুত করে রাখা ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।
বৈরুত বিস্ফোরণের পর সরকার বিরোধী বিক্ষোভের মুখে রোববার পদত্যাগ করেন লেবানিজ তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ।
বিস্ফোরণ পর হাজার হাজার ক্ষুদ্ধ জনতা শনিবার রাস্তায় নেমে আসেন। তারা রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবি জানান। ওই বিক্ষোভ রোববারও অব্যাহত ছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবি সরকারের পদত্যাগ। এ লক্ষ্যে তারা চারটি মন্ত্রণালয় এবং ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের অফিসেও ঢুকে পড়ে।
মঙ্গলবার লেবাননের বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ৬ হাজারের বেশি মানুষ।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৬৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে আরও ১৮৫ জনকে। ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, শনিবারের ওই সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন। সংকট সমাধানে দেশটির সব রাজনৈতিক দলকে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।