জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর শি জিনপিং সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের কথা নতুন নয়।
উইঘুরদের ওপর চীনের নিপীড়নের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ট্রিবিউনে। গত ২৪ আগস্ট সিস্টেমেটিক ইরেজার অব আইডেন্টিটি’ শিরোনামে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য তিলক দেবাশের দীর্ঘ একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত ১১ মিলিয়ন উইঘুরের অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। উইঘুররা তুর্কি বংশোদ্ভূত, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাদের পরিচয় মুখে ফেলার চেষ্টা করছে এবং তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বিশ্বাসের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে এবং তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হাম কমিয়ে আনা হচ্ছে। সমন্বিতভাবে গৃহীত এসব পদক্ষেপ মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
হান চাইনিজ ও উইঘুরদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে ২০০৯ সালের পর থেকে উইঘুরদের ওপর অবরোধ আরোপ করা হয়। ওই সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জন হান চাইনিজ প্রাণ হারান।
জিনজিয়াংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরের পর থেকে ক্র্যাকডাউন আরও তীব্র হয়। ২০১৭ সাল থেকে কর্তৃপক্ষ সেখানে ডিটেনশন ক্যাম্প পরিচালনা করছে। ক্যাম্পের নাম দেওয়া হয়েছে ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার।
চীন সরকারের কিছু গোপন নথি হস্তগত করেছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট। সেই নথিতে ডিটেনশন সেন্টার পরিচালনা বিষয়ক কিছু পরিকল্পনা ও নির্দেশনা ছিল। নাৎসী আমলের কনসেন্ট্রশন ক্যাম্পের আদলে তৈরি এ ক্যাম্পে ২০১৭ সাল থেকে ১/২ মিলিয়ন উইঘুরকে বন্দী করা হয়েছে।
ক্যাম্প থেকে ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের চিত্র। সেখানে উইঘুরদের আদর্শিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শ্রম দিতে বাধ্য করা হয়।
২০১৭ সালের পর থেকে ৮০ হাজার উইঘুর বন্দীকে ২৭টি কারখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। সেসব কারখানায় ৮৩টি বৈশ্বিক ব্রান্ডের পণ্য উৎপাদন করা হয়।
ডিটেনশন ক্যাম্প করা হয়েছে ধর্মীয় উগ্রপন্থা ও সহিংসতা বন্ধের উদ্দেশ্যে। প্রমাণস্বরূপ চীন বলছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে জিনজিয়াংয়ে সন্ত্রাসী হামলা হয়নি। কিন্তু উইঘুরদের ওপর চীনের নিপীড়ন নিয়ে সারা বিশ্বে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা শান্ত করতে চীন সমর্থ হয়নি।