শিষ্টাচারবর্জিত আচরণ আর রেওয়াজ ভঙ্গ করা অব্যাহত রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েক দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর গণমাধ্যম থেকে খানিকটা দূরে থাকলেও সেসবে সক্রিয় হচ্ছেন তিনি।
এসব মাধ্যম ব্যবহার করে তিনি প্রতিপক্ষকে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে গেছেন গলফ খেলতে।
শুক্রবার ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের ভাষণের পর এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, অন্যায়ভাবে প্রেসিডেন্সি দাবি করা বাইডেনের ঠিক হবে না। ওই দাবি আমিও করতে পারি।
তারপর গতকাল শনিবার ট্রাম্প গেছেন ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের স্টার্লিংয়ে ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাবে। নির্বাচনের পর এই প্রথম তিনি হোয়াইট হাউস থেকে বের হলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেন। ডাকভোটকে ‘অবৈধ’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি দাবি করেন, অবৈধ ভোটগুলোই তাঁর পরাজয়ের কারণ।
ডাকভোট গ্রহণ নির্বাচনব্যবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ধ্বংস করে দিয়েছে, এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় এ নিয়ে রিপাবলিকান শিবিরে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ও টেড ক্রুজের মতো শীর্ষ রিপাবলিকান নেতারা তাঁর পক্ষ নিলেও ওই পর্যায়ের অনেক নেতা বিরোধিতাও করছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারীদের মধ্যে রয়েছেন সিনেটর মিট রমনির মতো প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা।
তিনি বলেছেন, ভোট গণনা করা হবে। যদি কোনো অনিয়মের অভিযোগ থাকে, তাহলে সেটির তদন্ত হবে এবং শেষ বিচারে আদালতে নিষ্পত্তি হবে। গণতন্ত্রের ওপর আস্থা রাখুন, আমাদের সংবিধান এবং আমেরিকার জনগণের ওপর আস্থা রাখুন।
এ ছাড়া ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ল্যারি হোগান সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেন খর্ব না হয়।
টেক্সাসের রিপাবলিকান নেতা উইল হার্ড প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কার্যক্রমকে বিপজ্জনক অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে অবজ্ঞা করছেন এবং কোনো রকম প্রমাণ ছাড়াই আমেরিকানদের বৈধ মতামত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
এটা শুধু বিপজ্জনক এবং ভুলই নয়, যে ভিত্তির ওপর আমাদের জাতি দাঁড়িয়ে আছে, সেটিকেও অবজ্ঞা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনকেন্দ্রিক বক্তব্য নিয়ে অন্যদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন তাঁর দুই ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও এরিক ট্রাম্প।
পরাজয় যে মানবেন না, সেই হুঁশিয়ারি নির্বাচনের আগেই দিয়েছেন ট্রাম্প। নির্বাচনের পরও তাঁর অবস্থানের ব্যত্যয় হয়নি। টুইট করে তিনি সে অবস্থান পুনরায় জানান দিয়েছেন।
এ ছাড়া তাঁর প্রচার শিবিরও বিবৃতি দিয়ে ওই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ট্রাম্পের অশিষ্টাচার শুধু পরাজয় না মানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বাইডেনের উদ্দেশে কটু কথা বলার প্রবণতাও শুরু করেছেন তিনি, যা প্রকাশ পেয়েছে গত শুক্রবারের টুইটে।