মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির প্রেসিডেন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটকের পর দেশজুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী।
এ জরুরি অবস্থা জারির পর রাজধানী নাইপিদোতে মোবাইল ফোন ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিওর প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন মায়াবতির সম্প্রচার চালু রয়েছে। দেশটির সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ শহর ইয়াঙ্গুনের বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ওই শহরের আশেপাশের এলাকাগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা এর মধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। অনেকেই বাইরে বের হয়ে শুকনো খাবার কিনতে শুরু করেছেন।
তবে বিভিন্ন দোকানে চাল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন।
ইয়াঙ্গুনের আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এবং আঞ্চলিক সরকারি অফিসগুলোর দখল নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। বেসামরিক কর্মকর্তাদের এসব দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
শহরের বিভিন্ন স্থানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। অভ্যুত্থানের খবরে আতঙ্কিত হয়ে মিয়ানমারের মানুষ টাকা তোলার জন্য এটিএম বুথের সামনে জড়ো হচ্ছেন। অনেক বুথের সামনেই মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।
তবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মানুষজন এটিএম বুথ থেকে টাকাও তুলতে পারছে না।
এদিকে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সেনা অভ্যুত্থানের সমর্থনে উল্লাস করেছে স্ব-ঘোষিত কিছু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা। তারা সুয়েডাগন প্যাগোডার বাইরে শহীদদের সমাধিস্থলের কাছে গান গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
এই দলের একজন জানিয়েছেন যে, উদযাপনের অংশ হিসেবে তারা শহরের অন্য স্থানগুলোতেও যাবেন। কয়েকদিন ধরেই জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণই রয়েছে। এর পাল্টা কোন বিক্ষোভ কিংবা অভ্যুত্থান বিরোধী কোন বিক্ষোভ এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি।
দেশজুড়ে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে কাজ করে যাবে সেনাবাহিনী এবং জরুরি অবস্থা শেষে একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বলছে, জরুরি অবস্থা শেষ হলে দেশটিতে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। সেনা অভ্যুত্থানের কয়েক ঘণ্টা পর এমন তথ্য জানানো হয়েছে।