করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ লকডাউনে দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ হলেও দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয় । তাই আগামী দিনগুলিতে গৃহবন্দি হয়ে থাকারই পরামর্শ দিয়ে চলছেন সরকার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।
কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে কী এই লকডাউন? কোনও দেশ খুব জরুরী পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ও সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তবে লকডাউনের জেরে পরিবর্তন হতে পারে জনসাধারণের জীবনযাত্রা
★ লকডাউনে কী কী কাজে বাধাঃ
একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। রাস্তায় ভিড় করা যাবে না। রাস্তায় আড্ডা, গল্প, খেলাধূলো কিছুই করা যাবে না। কোথাও সাতজনের বেশি জমায়েত করা যাবে না।নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যাওয়া যেতে পারে তাতে বাধা নেই।
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোলে পুলিশ বাধা দেবে একমাত্র জরুরি পরিষেবার গাড়িতেই ছাড় রয়েছে।সেক্ষেত্রে সংস্থার পরিচয়পত্র দেখতে চাইবেন পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
হাসাপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় ও ওষুধ কিনতে যাওয়ার সময় ছাড় পাওয়া যাবে, তাতে কোনও বাধা নেই।
লকডাউনে কী কী খোলা থাকেঃ
কিছু জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সরকারি দপ্তর খোলা থাকবে। যেমন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, অর্থদপ্তর, এলপিজি, পেট্রোল পাম্প, বিদ্যুৎ, ওয়াসা।
খোলা থাকবে হাসপাতাল পরিষেবা, ওষুধের দোকান,ডাক্তারখানা, প্যাথলজিক্যাল ল্যাব। মুদি দোকান, ফল-সব্জি, দুধের দোকান, মাছ-মাংসের দোকান, হিমাগার, গুদাম এগুলিও খোলা থাকবে।
ব্যাংক সহ এটিএমগুলি সচল থাকবে। তবে ডিজিটাল লেনদেনেই জোর দেওয়া হয়।
প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদমাধ্যম চালু থাকবে।
পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী সক্রিয় থাকবেন। টেলিকম, ইন্টারনেট, তথ্যপ্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা, কেবল (cable) পরিষেবা, ডাকবিভাগ যথাসম্ভব চালু থাকবে।অত্যাবশকীয় পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় উৎপাদন সংস্থা চালু থাকবে।
★ লকডাউনে কী কী বন্ধ থাকে?
সমস্ত রকমের যান চলাচল বন্ধ থাকবে, আকাশপথে এবং স্থলপথে। তবে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বহনকারী গাড়ির ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
সমস্ত দোকান, বাণিজ্যিক সংস্থা, অফিস, কারখানা, ওয়ার্কশপ, গোডাউন বন্ধ থাকবে। সমস্ত ধর্মীয় স্থান দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে। কোনও ধরনের ধর্মীয় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। মৃত জানাজা ও সংকারের ক্ষেত্রে ২০ জনের বেশি একত্রিত হতে পারবেন না। আপৎকালীন কারণ ছাড়া, সকলকেই বাড়িতে থাকতে হবে এবং বাড়ির বাইরে বেরোতে হলে কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় জরিমানা করার প্রথা রয়েছে।
তবে লকডাউন মেনে চলার পরও সকলের মনে হতে পারে এই রোগের প্রভাব কমবে কিনা? সেই উত্তরে চিকিৎসক-সহ বিশেষজ্ঞরা জানান, এই রোগ নিরাময়ে এখনও কোনও ওষুধের আবিষ্কার না হওয়ায় রোগের সংক্রমণ কমাতে বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা কম, ফলে দিনে দিনে কমবে আক্রান্তের সংখ্যাও।তাই সরকার থেকে নিয়ম করে বাড়িতে থাকার জন্য এই লকডাউন ঘোষণা।