শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারী করোনায় বিশ্ব জুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। আর তার ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিশ্ব জুড়ে। পৃথিবী জুড়ে অন্তত ১৭৭টি দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক আমেরিকায়।
বিশ্বে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪০। মৃত্যু হয়েছে ৩৭ হাজার ৭৮১। তবে আশার কথা এই যে, মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৮৭ জন বলে কোলকাতার দৈনিক এইসময় প্রতিবেদন ছেপেছে।
লক ডাউনের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়াতে পারে ব্রিটেন। এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার জেনি হ্যারিস। তিনি জানিয়েছেন, তাড়াহুড়ো করে লকডাউন তুলে নিলে দেশ জুড়ে ফের করোনা-প্রকোপ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইতালিতে ৬১ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইটালিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ডক্টর্স। এঁদের মধ্যে ৪০ জন কাজ করছিলেন লম্বার্ডিতে। আক্রান্ত ৮ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী। মোট আক্রান্ত এখন এক লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে।
সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ইতালিতে সোমবার পর্যন্তসর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৯১ জনে।খবর আলজাজিরার।
প্রাণঘাতী এই বৈশ্বিক মহামারীতে বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় ইতালিতে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সংক্রামকে বিশ্বের সর্বমোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ঘটেছে সেখানে।
ইতালিতে একদিনে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছিল শুক্রবার, ৯১৯ জন। আর পরের দিন শনিবার মারা গেছেন ৮৮৯ জন।সেখানে শনিবার সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯২ হাজার ৪৭২ জন, পরের দিন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৬৮৯ জনে। সোমবার পর্যন্ত সেখানে নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫০ জন। এতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৩৯ জনে।
স্পেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭৩৪০। তবে দৈনিক মৃত্যুর হার সামান্য কমেছে। ২৪ ঘণ্টায় এ দেশে মৃত্যু হয়েছে ৫৩৭ জনের। আক্রান্ত ৮৫ হাজারের উপরে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। একই সঙ্গে বাড়ছে সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রাণহানির ঘটনা। এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ২৩ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্কে ২১ জন। অন্য দুজন হলেন মিশিগান ও নিউজার্সিতে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্কে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ৮ বাংলাদেশির প্রাণ। কমিউনিটিতে আরও অনেক প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র করোনার ভয়াল থাবায় জর্জরিত। নিউইয়র্কের কারাগারগুলোতেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। রোববারও ৫ বাংলাদেশিসহ আড়াই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি হবে। এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে সমাজিক দূরত্বের সময়সীমা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট। আগামী দুই সপ্তাহকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এ সময়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে সামজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে। এ দুঃস্বপ্ন থেকে যেন বেরিয়ে আসতে পারি, সেজন্য মার্কিন সরকার আরও পদক্ষেপ নিয়েছে। সুতরাং সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। নয়তো মৃতের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিনের মতো ছিল করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সন্দেহভাজন রোগীদের ভিড়। কিন্তু প্রয়োজনীয় কিটের অভাবে তাদের সবার পরীক্ষা হয়নি বলে জানিয়েছেন রোগীরা।