জার্মানির পশ্চিমের শহর মুনস্টার। শহরটিতে আজান দেওয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন দেশটির একটি আদালত।
এর দুই বছর পর বুধবার ওই রায় নাকচ করে দিয়েছেন সে দেশের উচ্চ আদালত।
মসজিদে আজান ধর্মীয় অধিকার। রাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এবং এই অধিকার অন্য ধর্মের অধিকারেও হস্তক্ষেপ করে না।
শহরটিতে আজান নিষিদ্ধ হয়েছিল ২০১৮ সাল থেকে। বুধবার জার্মানির ওই আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সপ্তাহে এক দিন যেভাবে সেখানে আজান দেওয়া হতো, এখন থেকে তা আগের মতোই করা যাবে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে আদালতের দ্বারস্থ হন মুনস্টার শহরের এক খ্রিস্টান দম্পতি। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদ আছে। সেখানে সপ্তাহে এক দিন আজান দেওয়া হয়।
এক কিলোমিটার দূর থেকে ওই আজান শোনা যায়। তাঁরা খ্রিস্টান, আজানের শব্দ তাঁদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ করে।
আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, গির্জার ঘণ্টার সঙ্গে মসজিদের আজানের তুলনা চলে না। কারণ, ঘণ্টায় কোনো ধর্মীয় শব্দ থাকে না। কিন্তু আজানে ধর্মীয় বাক্য থাকে। ফলে যে অমুসলিমদের কানে সেই শব্দ পৌঁছছে, তাঁরা তা শুনতে না-ও চাইতে পারেন।
২০১৮ সালে নিম্ন আদালত ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রায় দিয়েছিলেন যে মসজিদে লাউড স্পিকারে আজান দেওয়া যাবে না। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে স্থানীয় মুসলিম সংগঠন উচ্চ আদালতে গিয়েছিল।
বুধবার উচ্চ আদালত জানিয়েছে, আজান দেওয়া অন্যের ধর্মীয় অধিকারে কখনোই হস্তক্ষেপ হতে পারে না। ফলে সপ্তাহে এক দিন মসজিদে আজান দেওয়া হতেই পারে।
শুধু তাই নয়, আগে ওই মসজিদে সপ্তাহে এক দিন দুই মিনিট ধরে আজান দেওয়া হতো। আদালত জানিয়েছেন, ১৫ মিনিট ধরে সেখানে আজান দেওয়া যাবে।
ধর্মীয় অধিকারের স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দিয়েছেন আদালত। বলা হয়েছে, অন্যের ধর্মের আচারের সংস্পর্শে আসা কখনো নিজের ধর্মে হস্তক্ষেপ হতে পারে না। ফলে ওই খ্রিস্টান দম্পতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।