বিশ্বজুড়ে যাদের সামরিক-বাণিজ্যিক আধিপত্য; সেই যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষনেতা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আজ (৩ নভেম্বর)।
সারা বিশ্বের নজর আমেরিকায়। তবে প্রতিবার যেমন করে নজর থাকে কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তা দেখার জন্য, এবার তা হচ্ছে না।
কারণ বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজয় মেনে নেবেন কি না; নির্বাচনী প্রচারকালে তা নিয়ে বিপুল পরিমাণ সংশয়ের জন্ম দিয়ে রেখেছন তিনি। এবার সবার চোখ তাই ভোট-পরবর্তী অনিশ্চয়তায়।
মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আগের সব প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।
প্রতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতে শুরু করে ভোটগ্রহণের রাত থেকেই। পরের দিন পরাজিত প্রার্থীর বক্তব্যের মাধ্যমেই আনুষ্ঠানিকভাবে সিলমোহর পড়ে জনগণের রায়ে।
এদিকে ৩ নভেম্বরের এই মার্কিন নির্বাচনে ‘এগিয়ে থাকার’ আভাস পেলেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণার কথা বলেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচন ঘিরে তাঁর এমন মন্তব্য জনমনে শঙ্কা জাগিয়েছে।
মার্কিন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, নির্বাচনের পর মঙ্গলবার রাতে এগিয়ে থাকার আভাস পেলেই আনুষ্ঠানিক ফল জানানোর আগেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাঁর এমন মন্তব্য হতাশ করেছে নির্বাচনী বিশ্লেষকদেরও।
এবার ডাকযোগে বিপুল আগাম ভোট পড়ায় বেশ কয়েকটি রাজ্য ৩ নভেম্বর নির্বাচন শেষে ভোট গণনা শুরু করবে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ভোট গণনা শুরু করবে ৩ নভেম্বরেরও পরে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল পেতে তাই কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।
কিন্তু ট্রাম্প চান নির্বাচনের রাতেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করতে। সেটা বৈধ করারও পাঁয়তারা করছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
১ নভেম্বর রবিবার ট্রাম্পের উপদেষ্টা জ্যাসন মিলারও গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভোটের পর ফল পাল্টে যাওয়ার আভাস পেলে বুঝতে হবে ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচনের ফল ‘চুরি’ করেছে।
যদিও অধিকাংশ সমীক্ষায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এগিয়ে। এমনকি ২০০৮ সালের পর কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে এতটা শক্তিশালী দেখায়নি। কিন্তু সমীক্ষাকে ‘ভুয়া’ বলে ট্রাম্প হুংকার দিয়ে চলেছেন।
প্রেসিডেন্টের এমন মনোভাব ভোট-পরবর্তী সহিংসতার দুশ্চিন্তা জাগাচ্ছে অনেকের মনে। মার্কিনিদের শঙ্কা হলো, ভোটে পরাজিত হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেননি।
এদিকে আসন্ন মার্কিন নির্বাচন নিয়ে করা সর্বশেষ জাতীয় জরিপে দেখা গেছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন।
ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেও বাইডেন কিছুটা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসই পাওয়া যাচ্ছে।