চীন ভারতের উত্তেজনা যেন থামছেই না। এবার প্যাংগং এলাকায় চীনের সৈন্যদের উপস্থিতি ঘিরে নতুন করে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনা মোতায়েনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবারই শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে দু’দেশ।
স্যাটেলাইট চিত্রে স্পষ্ট দেখা গেছে যে, ফিঙ্গার ৪ এবং ফিঙ্গার ৫ এর মাঝে বিশালাকার চীনা লিপি ও প্রতীক এঁকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই দুই ফিঙ্গার পয়েন্টের মাঝে প্রচুর অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে ফেলেছে চীনা সেনারা। মজুত করা হয়েছে অস্ত্রশস্ত্রও।
ওই বৈঠকের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এর মধ্যেই নতুন স্যাটেলাইট চিত্র সামনে এসেছে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু গালওয়ান উপত্যকা নয়, নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোতেও চীনা আগ্রাসনের ছবি ধরা পড়েছে। ২৮ জুনের ওই ছবি ঘিরেই তৎপরতা শুরু হয়েছে নয়াদিল্লিতে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, গত মে মাসের গোড়ার দিকে প্যাংগং লেক বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীন সেনা মজুতের পর থেকেই ফিঙ্গার ফোরে আর টহল দিতে দেওয়া হচ্ছে না ভারতীয় সেনাবাহিনীকে।
পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের ধার বরাবর চীনের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই ফিঙ্গারপয়েন্টগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মনে করে, ফিঙ্গার ১ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত পুরো এলাকায় ভারতীয় সেনার টহলদারির অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে চীন দাবি করে, ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত তাদের বাহিনী টহল দিতে পারে এবং সে অধিকার তাদের রয়েছে। এত দিন পর্যন্ত সেভাবেই চলছিল। ভারতীয় সেনারা শেষ প্রান্ত অর্থাৎ ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত টহল দিত।
নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার ৪ এবং ফিঙ্গার ৫ এর মধ্যে অন্তত ৮১ মিটার লম্বা ও ২৫ মিটার দীর্ঘ এলাকায় চীনা হরফে লেখা এবং প্রতীকচিহ্ন আঁকা হয়েছে। আরও দেখা গেছে, শুধু প্যাংগং লেকের ধার বরাবর নয়, আরও অন্তত ৮ কিলোমিটার ভারতের দিকে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছে চীনা বাহিনী। গড়ে তোলা হয়েছে ১৮৬টি ছোট বড় অস্থায়ী তাঁবু ও কুঁড়েঘর। ফিঙ্গার ৫ এর কাছে একটি নজরদারি বিমানও দেখা গেছে বলে উপগ্রহ চিত্র ব্যাখ্যা করে একটি সূত্র দাবি করেছে।
মে মাসের গোড়ার দিকে প্যাংগং লেক বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রচুর সেনা মোতায়েন করে চীন। ভারতও সেনা সমাবেশ ও রসদ মজুত করে। সে সময়ের পর থেকেই ফিঙ্গার ৪য়ে আর ভারতীয় সেনাদের এগোতে দেওয়া হচ্ছে না। ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীকে যেতেই দেওয়া হচ্ছে না। টহলদারিও বন্ধ রয়েছে।