করোনাভাইরাসের তাণ্ডব যেন থামছেই না! এ সপ্তাহেই একদিনে আবারও এক হাজারের বেশি মৃত্যু দেখেছে দেশটি, হাসপাতালগুলোতে হু হু করে বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। অবস্থা এতটাই নিয়ন্ত্রণহীন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শেষপর্যন্ত স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, তার দেশে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য মূলত প্রেসিডেন্টকেই দায়ী করছেন মার্কিনিরা। ফলে নির্বাচন থেকে মাত্র চার মাস দূরে থাকতে টালমাটাল হয়ে উঠেছে ট্রাম্পের গদি।
১৯টি অঙ্গরাজ্যে রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি মাসেই ৩২টি অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে, আর ১৬টি অঙ্গরাজ্যে বেড়েছে মৃতের হার।
এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, জর্জিয়া, ক্যালিফোর্নিয়াসহ অন্তত ৪০টি অঙ্গরাজ্যে এখনও ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে এ ভাইরাস।
মহামারি পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাওয়ার আগে আরও খারাপ হতে পারে। পছন্দ না হলেও অবস্থাটা আসলে এমনই।
শুরু থেকেই ভাইরাস প্রতিরোধে মুখে মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা উড়িয়ে দিলেও সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে এখন সুর বদলেছেন ট্রাম্প। কিছুদিন থেকে তিনি নিজেও মাস্ক পরছেন, অন্যদেরও মাস্ক পরতে উৎসাহিত করছেন।
মাস্ক পরার বিষয়টি এখন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে। সংরক্ষণশীলদের অনেকেরই দাবি, মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা জারি করা জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন। শুরু থেকে ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন।
নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে এখনও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ফ্লোরিডা, টেক্সাস, পেনসিলভানিয়া, ওহিওর মতো এলাকাগুলোতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি এর বিস্তার। এর প্রভাব পড়েছে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তাতেও। প্রায় সব ক’টি জরিপেই জনপ্রিয়তার দৌড়ে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন।
১৫-২১ জুলাইয়ে রয়টার্সের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৮ শতাংশ মার্কিনি করোনা নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন, এর মধ্যে অবশ্য ২০ শতাংশই কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
এমন অবস্থায় দ্বিতীয়বার নির্বাচনে জিতে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।