বুধবার ভোররাতে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো সৈন্য মারা যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ওই হামলায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসে সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতি দেয়ার সময় হামলার বদলা নেয়ার কোনো হুমকি দেননি ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা বাদ দেয় তাহলে শান্তি স্থাপনে তিনি প্রস্তুত।
ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সর্বমোট ২২টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ‘আইন আল-আসাদ’ ও ইরবিল ঘাঁটিতে আঘাত হানে।
ইরাকের সেনাবাহিনীর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের পক্ষ থেকে সব মিলিয়ে ২২ টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আল আসাদ ঘাঁটিতেই ১৭ টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়।
যদিও এর মধ্যে দুটি মিসাইল বিস্ফোরিত হয়নি। তবে ইরবিলে যে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে তার সবগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, ইরবিল প্রদেশের সিদান গ্রামে ইরানের ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং ডোহুক প্রদেশের বারদাহ রাশশ জেলায় তৃতীয়টি আঘাত হানে।
ইরবিল শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সিদান অবস্থিত, অন্যদিকে ৪৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিতি বারদাহ রাশশ। ইরাকের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে ইরবিলে ঘাটি লক্ষ্য করে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা রয়েছে।
বুধবার ভোররাতে এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানির উপর আগ্রাসী মার্কিন সেনাদের সন্ত্রাসী ও অপরাধমূলক হামলার কঠোর জবাব দিতে আইন আল-আসাদ ঘাঁটিকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।
অভিযানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘শহীদ সোলাইমানি’ এবং এই অভিযানের মাধ্যমে যে ‘বিজয়’ অর্জিত হয়েছে বলে আইআরজিসির বিবৃতিতে দাবি করে ইরানের মুসলিম জাতিকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। আইআরজিসির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার কাপুরুষোচিত পদক্ষেপের ‘কঠোর প্রতিশোধ’ নেয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, তাদের ঘাঁটিতে এক ডজনেরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া, ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ইরবিল শহরের মার্কিন ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে।
ইরবিল বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ওই বিমানবন্দরের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।