বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব সৃষ্টি করে চলা নভেল করোনাভাইরাস কি সত্যিই প্রকৃতি থেকে সৃষ্টি, নাকি এটাকে চীনের ল্যাবে তৈরি করা হয়েছে? এটা নিয়ে বিতর্ক শুরু থেকেই উঠছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বারবার চীনের দিকে তোপ দাগলেও বেইজিং জোর গলায় এটাকে ‘ষড়যন্ত্র তত্ব’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে এবার নতুন প্রমাণ সামনে এসেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে চীনের উহানের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এটাকে এখন আর অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
ফাঁস হওয়ার মার্কিন দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ ওই বার্তায় বলা হয়, উহানের ওই ল্যাবে কর্মরত জনবলের পর্যাপ্ত দক্ষতার অভাব রয়েছে। এদিকে ফাঁস হওয়া এই বার্তা উহানের ল্যাব নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহকে সমর্থন করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ একাধিক কর্মকর্তা এর আগে দাবি করেছেন যে চীনের ল্যাব থেকেই দুর্ঘটনাবশত উৎপত্তি হয়েছে করোনাভাইরাসের। তবে এ নিয়ে কোনো প্রমাণ উত্থাপন করতে পারেননি কেউ।
করোনা যে উহানের গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল, এই দাবি জোরালো করে তুলতে এ বার চীনে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরের আলোচনার একটি গোপন বার্তা ফাঁস করল আমেরিকা। ওই বার্তা থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালেই চীনের ওই ল্যাবের জনবল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মার্কিন দূতাবাস।
এই ফাঁস হওয়া বার্তা প্রমাণ করে না যে উহানের ল্যাব থেকেই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে। আবার সেটির সম্ভাবনা একবারে উড়িয়েও দিচ্ছে না এই বার্তা। এর আগে উহানের ওই ল্যাবের বিজ্ঞানীরাও দাবি করেছিলেন যে তারা বাদুড়ের করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন । তবে কভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে ওগুলোর মিল প্রায় ২০ শতাংশ কম।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যায়ের সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান টম ইংলেসব্যা বলেন, বার্তার মাধ্যমে ল্যাব নিয়ে যে সন্দেহ উঠেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায় না আবার ফেলেও দেয়া যায় না। এ নিয়ে ইংলেসব্যা বলেন, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এটি লেখা হয়। তখনো করোনা শুরু হয়নি। এই সময়ের মধ্যে ওই ল্যাবে অনেক পরিবর্তন হতে পারে।
মার্কিন দূতাবাসের ফাঁস হওয়া এই বার্তা নিয়ে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইনফেকশন এন্ড ইমিউনিটি বিভাগের পরিচালক ইয়ান লিপকিন বলেন, আমি এই ধারণাকে সমর্থন করার মতো কোনো প্রমাণ দেখছি না। আপনি শুধু শুধই বলতে পারবেন না যে ভাইরাসটি দুর্ঘটনাক্রমে ছড়িয়েছে।
এদিকে গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন যে, করোনা ইস্যুতে চীন সকল তথ্য উপাত্ত মুছে দিয়েছে। এই ইস্যুতে চীনকে আরো স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
করোনায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩৭ লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার ৩০৯ জন। মারা গেছেন ৫ লাখ ৭২ হাজার ৪২৬ জন।