যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুধু অনলাইন ক্লাস করতে পারবেন না বিদেশি শিক্ষার্থীরা। অনলাইন ক্লাস করলে বাতিল করা হবে ভিসা, ফিরে যেতে হবে নিজ নিজ দেশে। সম্প্রতি জারি করা আমেরিকার এই ভিসানীতিকে চ্যালেঞ্জ করে এবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করল তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাগুলো।
গত ৬ জুলাই মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) দপ্তর একটি নির্দেশিকা জারি করে জানায়, এফ-১ এবং এম-১ ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন কোর্স করা যাবে না। অনলাইনে পড়তে হলে এখান থেকে চলে যেতে হবে। নয়তো এমন কোনো জায়গায় নাম নথিভুক্ত করাতে হবে, যেখানে সশরীরে উপস্থিত থেকে ক্লাস করা যাবে। না হলে ওই শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হবে।
গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো এক ডজনেরও বেশি সংস্থা এই মামলায় অংশ নিয়েছে। ওই নির্দেশিকায় সাময়িক স্থগিতাদেশ চেয়ে সংস্থাগুলোর দাবি, এতে তাদের নিয়োগের পরিকল্পনা ও প্রক্রিয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হবে।
সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পক্ষ থেকে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বড় বড় মার্কিন তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা ছাড়াও যোগ দিয়েছে মার্কিন চেম্বার অব কমার্স এবং তথ্য-প্রযুক্তি পরামর্শদাতা সংস্থাও।
জেরে এই কারিকুলার প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (সিপিটি) এবং অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) প্রক্রিয়া পুরোপুরি ব্যাহত হবে। মামলায় বলা হয়েছে, মার্কিন সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে এসব শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর পেছনে বিনিয়োগকে আমেরিকায় না আনলে বিশ্বের অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গে তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাই শিক্ষার্থীদের পাঠ শেষের আগেই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। পড়াশোনা শেষের পরেই তাঁরা চাকরিতে যোগ দেন। আবার অনেক সংস্থা পড়াশোনা চলাকালীনই সমান্তরালভাবে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পড়াশোনা শেষে নিজেদের সংস্থায় নিয়োগ করে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং লকডাউনের জেরে এমনিতেই সারা বিশ্বের মতো আমেরিকার অর্থনীতিও ব্যাপক সংকটের মুখে পড়েছে। মামলাকারীদের যুক্তি, এই সিদ্ধান্তের ফলে যেসব শিক্ষার্থীকে তাঁরা নিয়োগের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছেন, তাদের প্রায় অর্ধেকই দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হবেন। ফলে শুধু সংস্থাগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, আমেরিকার অর্থনীতিতেও সংকট আরো বাড়বে।