বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত মহামারী করোনা ভাইরাস সংকট প্রতিরোধে সার্ক দেশ সমুহকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ কারার আহবান জানালেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
তিনি আজ ১৫ মার্চ রবিবার গোধুলি বেলায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সমন্বিত কর্মসূচি ঠিক করতে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন সার্কভুক্ত আট শীর্ষ নেতা। এতে ঢাকা থেকে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবনায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবে রাজাপাকসে এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জাফর মির্জা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজনের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রথমে ধন্যবাদ জানান। চীনের উহান থেকে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২৩ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভারতে নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখার সুযোগ করে দেয়ায় কৃতজ্ঞতাসহ ধন্যবাদ জনিয়েছেন।এসময় তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় ও নাগরিকদের রক্ষা করতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশের সমুদ্র-স্থল-বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে তিনজন করোনস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তিনটিই বিদেশ থেকে আসা রোগী। তারা ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। নতুন করে আরও দু’জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ দু’টিও বিদেশ থেকে আসা কেস। স্থানীয়ভাবে এখনো কেউ সংক্রমিত হয়নি।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জনগণকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমরা একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেছি। সতর্কতা বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছি। যেখানে প্রয়োজন হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।” করোনা প্রতিরোধে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালসহ নতুন নির্মিত চারটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনাক্রান্ত রোগীদের জন্য রাজশাহীতেও একটি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। সব জেলার সব হাসপাতালে এ রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কয়েকটি খালি ভবন নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে। এছাড়া, আমরা উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। স্কুলের শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার জন্যও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে আইসোলেশন গাউন, মাস্ক, ইনফ্রারেড থার্মোমিটার এবং করোনা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র মজুদ করা আছে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ভবিষ্যৎ যে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধে ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠা করা খুব জরুরি বলে মত দেন শেখ হাসিনা। সবাই সম্মত হলে বাংলাদেশ এ পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী বলেও জ্ঞাত করেন উক্ত ভিডিও কনফারেন্সে।সেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রেসিডেন্ট- প্রধানমন্ত্রী -স্বাস্থ্য উপদেষ্টারা এ অঞ্চলে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় করণীয় কী হতে পারে এবং তাদের নিজ নিজ দেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা নিয়ে কথা বলছেন।